ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী আজ বুধবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ মিলনায়তনে ডিএমপির নভেম্বর মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী আজ বুধবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ মিলনায়তনে ডিএমপির নভেম্বর মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন

থানায় অভিযোগ বা জিডি হলে পুলিশকে ১ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে যেতে হবে: ডিএমপি কমিশনার

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, থানায় কোনো অভিযোগ বা জিডি হলে পুলিশকে এক ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে যেতে হবে এবং প্রাথমিক অনুসন্ধান করতে হবে। প্রয়োজনে মামলা রুজু করতে হবে। যেকোনো ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে পুলিশ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।

আজ বুধবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ মিলনায়তনে ডিএমপির নভেম্বর মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এসব কথা বলেন। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে সভা চলে বেলা ১টা পর্যন্ত।

ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী বলেন, ‘প্রায় দুই কোটি মানুষ ঢাকা শহরে বসবাস করে। যানজটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এ শহর। জুলাই-আগস্টে পুলিশের ভূমিকার জন্য পুলিশের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। এরূপ অবস্থায় ঢাকা ডিএমপি তথা বাংলাদেশ পুলিশ হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মানুষের কাছে যাওয়া এবং তাদের কথা শোনা। একই সঙ্গে নাগরিকদের বলা যে আমরা তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে চাই।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বিশ্বায়নের এই যুগে পুলিশবিহীন সমাজব্যবস্থা চিন্তা করা যায় না। আমি ডিএমপি কমিশনার হিসেবে ডিএমপিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাই এবং আমার যারা সহকর্মী, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারাও উদাহরণ সৃষ্টি করুন। আপনাদের আচার-আচরণ, নৈতিকতা ও জীবনযাপন পদ্ধতি এমন হতে হবে, যেন তা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়। আইনগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি একজন পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কী ধারণা পোষণ করে, সেটিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী বলেন, পুলিশের অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করা। কোনো অবস্থাতেই কোনো খুনের ঘটনা যেন অপমৃত্যু হিসেবে থানায় রেকর্ড না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং এর জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দায়ী হবেন।

ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ ও কিশোর-গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে উল্লেখ করে সাজ্জাত আলী বলেন, এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে শিক্ষক, ছাত্র-জনতা, শ্রমিকনেতা, ব্যবসায়ীসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে নাগরিক (সিটিজেন) ফোরাম গঠন করা হবে।

সভায় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মো. ফারুক হোসেন গেল নভেম্বর মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য, অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলাসংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন ও পর্যালোচনা করেন। এ সময় ডিএমপি কমিশনার বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দেন। মাসিক অপরাধ সভায় নভেম্বরে ঢাকা মহানগর এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা বিধানসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।

সভায় অন্যদের মধ্যে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার, অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক, অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপকমিশনার, ডিএমপির সব থানার ওসিরা উপস্থিত ছিলেন।