বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, বিদায়ী বছরে (২০২৩) দেশের সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫০৫ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৭ হাজার ৯০২ জন।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ২০২৩ সালের সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
সংগঠনটি সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তাতে বলা হয়, ২০২৩ সালে ৬ হাজার ২৬১ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন ১০ হাজার ৩৭২ জন। এ সময় রেলপথে ৫২০টি দুর্ঘটনায় ৫১২ জন নিহত ও ৪৭৫ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৪৮টি দুর্ঘটনায় ৯১ জন নিহত হয়েছেন।
সড়কে গত বছর ২ হাজার ৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ১৫২ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৩৯ আহত হয়েছেন, যা মোট দুর্ঘটনার ৩২ শতাংশের বেশি।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলেছে, ২০২২ সালের চেয়ে বিদায়ী ২০২৩ সালে ছোট যানবাহনের সংখ্যা হঠাৎ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়া ও এসব যানবাহন অবাধে চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বেড়েছে। এতে ফিডার রোডে ৫৫ শতাংশ, জাতীয় মহাসড়কে ১৪ শতাংশ এবং রেলক্রসিংয়ে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। তবে এবার আঞ্চলিক মহাসড়কে ৪৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে বলে জানিয়েছে এই সংগঠন।
এ বিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক বলেন, অবাধে ইজিবাইক চলছে। এসবের পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা।
২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৯৫০ জন চালক মারা যান।
গত বছর দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। এখানে ১ হাজার ৭৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৭১২ জন নিহত ও ২ হাজার ৩৮১ জন আহত হয়েছেন।
গত বছর ১৭ জানুয়ারি সবচেয়ে বেশি ৩৫টি দুর্ঘটনা ঘটে এবং ৭ জুলাই দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ৪১ জন মারা যান। অন্যদিকে কম দুর্ঘটনা ঘটে ২৬ মার্চ।
মোজাম্মেল হক বলেন, বর্তমান সরকার গত ১৫ বছরে সড়কে অবকাঠামো নির্মাণে যতটা সাফল্য দেখিয়েছে, ঠিক ততটা ব্যর্থ হয়েছে সড়কে নৈরাজ্য ঠেকাতে। তিনি আশা করেন, নতুন মেয়াদে সরকার দুর্ঘটনা কমাতে উদ্যোগী হবে।