রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত সাততলা ভবনের নিচতলা ও বেজমেন্ট অনেকটা ধসে গেছে। ভবনের কলামগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত। এ অবস্থায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সেখানে যাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে ওই ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার তৎপরতা চালাবে ফায়ার সার্ভিস। সে কারণে এখনো ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে কেউ আটকা পড়ে আছে কি না, তা নিশ্চিত নয় ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘যখন বিস্ফোরণ ঘটে, তখন মার্কেটটি চালু ছিল। মার্কেটে কর্মচারী ছিল, ক্রেতাও ছিল। এ জন্য আমরা বলতে পারছি না, ভেতরে কতজন আছে।’ সেখানে লোকজন আটকা থাকতে পারেন বলে মনে করছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছের সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি ভবন সাততলা এবং আরেকটি ভবন পাঁচতলা। এর মধ্যে সাততলা ভবনের বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহতের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি।
প্রায় চার ঘণ্টা সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে রাত নয়টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন। তিনি বলেন, বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে এখানে বিস্ফোরণ হয়। যেহেতু ফায়ার সার্ভিসের প্রধান কার্যালয় ও ইউনিটগুলো কাছে, সে জন্য সাত মিনিটের মধ্যেই তাঁরা এখানে আসেন। ইতিমধ্যে বেজমেন্ট ও নিচ তলা অনেকটুকু ধসে গেছে। ভবনের কলামগুলোও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। যার জন্য তাঁরা ঢুকতে পারছেন না। তাঁরা রাজউক ও সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ মত নিয়েছেন। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে একটু ‘স্টাবল করে’ বাকি উদ্ধার অভিযান করা হবে। তবে অন্যান্য উদ্ধারকাজ করছেন তাঁরা।
বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মাইন উদ্দিন বলেন, কিছুক্ষণ আগে এখানকার মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা বলেন, নিচে কোনো গ্যাসের লাইন ছিল না। তবে পানির লাইন এবং পানি সংরক্ষণাগার ছিল। তবে বিস্ফোরণ কী থেকে ঘটেছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করতে কিছু বলতে পারছেন না। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল আসছে। অন্য কিছু আছে কি না, তা তদন্ত করা হবে। তদন্ত করে জানানো হবে।
এখনো নিখোঁজ আছে কি না, জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা আমাদের উদ্ধার অভিযান চালাব। কিন্তু তার আগে ভবনটি একটু স্ট্যাবল করতে হবে, যেহেতু ভবনের কলামগুলো ভেঙে গিয়েছে। উদ্ধার অভিযানই এই মুহূর্তে আমাদের অগ্রাধিকার।’