সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণ

কান্না, আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে ঢাকা মেডিকেলের পরিবেশ

রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে নিহত মানুষের স্বজনদের কান্না। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ছবি: খালেদ সরকার

একটু পরপর অ্যাম্বুলেন্স আসছে। কোনোটা থেকে লাশ নামানো হচ্ছে। কোনোটা থেকে আহত ব্যক্তিদের নামানো হচ্ছে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায়। লাশ দেখেই স্বজনের খোঁজে আসা মানুষেরা কান্নায় চিৎকার করে উঠছেন।

গুলিস্তানের ভবনে বিস্ফোরণে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৫ হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের খোঁজে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রাঙ্গণে কয়েক শ মানুষ ভিড় করেছেন। স্বজনদের খোঁজে এসেছেন তাঁরা। তাঁদের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ। সেই সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বাঁশির আওয়াজে এক ভয়ার্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

হাসপাতালের বারান্দায় স্বামী মমিন উদ্দিনের খোঁজে অনবরত বিলাপ করে চলেছেন এক নারী। স্বজনদের কেউ ওই নারীকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন এই বলে যে তাঁর স্বামী হালকা আঘাত পেয়েছেন। আবার কেউ বলছেন, খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু নারী বারবার বলছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না। মমিনকে পাওয়া গেলে আমি একবার দেখতে চাই।’

হাসপাতালের সামনে এক নারীর আহাজারি

খবর শুনে একপর্যায়ে মমিন উদ্দিনের শাশুড়িও আসেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে তিনিও আর্তনাদ করছিলেন। আর শাড়ির আঁচল তুলে বারবার বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, ‘আল্লাহ, তুমি ভিক্ষা দাও।’ মমিন উদ্দিনের দুই মেয়েও হাসপাতালে এসেছে। কোনো স্বজনকে দেখলেই জিজ্ঞেস করছে, ‘বাবাকে পাওয়া গেছে?’

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁপছিলেন মো. মোহসীন নামের এক ব্যক্তি। তাঁর ছোট ভাই মো. তুহিন বিস্ফোরণে পায়ে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি। খবর শুনে ছুটে এসেছেন তিনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোহসীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাইকে খুঁজে পেয়েছি। ওর পা পুড়ে গেছে।’

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বাসিন্দা তাঁরা। মোহসীনরা দুই ভাই একটি জুতার দোকানে কাজ করতেন। তাঁর ছোট ভাই তুহিন গুদাম থেকে মাল আনতে গিয়েছিলেন। এ সময় বিস্ফোরণ হয়।