স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। দুপুর ১২টার পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থানের সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকেরা বক্তব্য দেয়
স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। দুপুর ১২টার পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থানের সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকেরা বক্তব্য দেয়

স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে আজও কর্মবিরতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিল এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেলা একটা পর্যন্ত শিক্ষকেরা কোনো ক্লাস নেননি। তবে পরীক্ষা এই কর্মসূচির আওতামুক্ত ছিল।

এদিন দুপুর ১২টার পরে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। সেখানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকেরা বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এই কর্মসূচি পালন করছেন। কর্মসূচি অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিন অর্ধদিবস কর্মবিরতি এবং আগামী রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন শিক্ষকেরা। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আগামী সোমবার থেকে তাঁরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন শুরু করবেন। সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে সব ক্লাস, পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কাজসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন শিক্ষকেরা।

কর্মবিরতি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নিস্তার জাহান কবির আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার যদি নতুন করে কোনো পেনশন স্কিম চালু করতে চায়, তবে তা সবার জন্য এক কাঠামোয় করা প্রয়োজন। বৈষম্য করে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আলাদা নিয়ম হতে পারে না। এমনিতেই দেশে একজন শিক্ষক যে সুযোগ-সুবিধা পান, তা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মাশরিক হাসান বলেন, কর্তৃপক্ষ এখনো দাবি মেনে না নেওয়ায়, আগামী রোববার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন হবে। কর্তৃপক্ষের প্রতি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি দ্রুত মেনে নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

গত বছর সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়। গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের পর থেকে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার চাকরিতে যাঁরা নতুন যোগ দেবেন, তাঁরা বিদ্যমান ব্যবস্থার মতো আর অবসরোত্তর পেনশন-সুবিধা পাবেন না। তার পরিবর্তে নতুন চাকরিজীবীদের বাধ্যতামূলক সর্বজনীন পেনশনের আওতাভুক্ত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের আহ্বানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ওই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মসূচি পালন করছেন। পাশাপাশি শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনেরও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, প্রত্যয় স্কিম নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রত্যয় স্কিম চালুর ফলে বিদ্যমান কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; বরং তাঁদের বিদ্যমান পেনশন বা আনুতোষিক সুবিধা অক্ষুণ্ন থাকবে। যাঁদের ন্যূনতম ১০ বছর চাকরি অবশিষ্ট আছে, তাঁরা আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রত্যয় স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।