মারধরের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূইয়া এবং জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক নাহিদ হাসান
মারধরের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূইয়া এবং জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক নাহিদ হাসান

বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা

রাজধানীর বঙ্গবাজারে বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূইয়া এবং জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক নাহিদ হাসান। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁদের ওপর এ হামলা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হামলার শিকার দুই সাংবাদিকের অভিযোগ, কাপড় দেখতে গিয়ে ‘সিন্ডিকেটের’ প্রতিবাদ করায় তাঁদের হাতুড়ি, রড, জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর রোকসানা ইসলাম চামেলির স্বামী আবুল হোসেন টাবু, বিএনপির পদপ্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম ও শাহবাগ থানার ২০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ ইউসুফ।

আল সাদী ভূইয়া বলেন, ‘আমি ও আমার সাবেক সহকর্মী নাহিদ ভাই বঙ্গবাজারে বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে কাপড় দেখতে গিয়েছিলাম। তখন মার্কেটের মালিকপক্ষের কেউ আমাদের চিনতে পেরে বলে সজল ভাই (মার্কেটের মালিক) ওপরে আছেন। আমরা সেখানে গেলে টাবু ও স্বপনের নেতৃত্বে উপস্থিত লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। সিন্ডিকেটের প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর তারা হামলা করে। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর বেশি মারধর করা হয়। পরে বের হয়ে আমরা পুলিশ নিয়ে আসি। পুলিশের সামনেও তারা আমাদের মারার চেষ্টা করলে পুলিশ কোনো সাহায্য করেনি।’

হামলার শিকার অপর সাংবাদিক নাহিদ হাসান বলেন, ‘মার্কেটের গেট ভেঙেও আমাদের মারধর করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম। তাদের কাছে পানি চেয়েছি কিন্তু পানি পর্যন্ত দেয়নি তারা। এ সময় সেনাবাহিনীকে ফোন দিয়েও কোনো সাড়া পাইনি। সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছিলাম তবুও পিটিয়েছে আমাদের। আমার ফোন, মানিব্যাগ ও আইডি কার্ড নিয়ে গেছে।’

আল সাদী ভূইয়া জানান, তাঁকে মেঝেতে ফেলে মাথায়, পিঠে, কোমরে ও পায়ে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। তাঁর সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর নাহিদ হাসান জানান, তাঁকে দোতলায় মারধর করার পর ছাদে তুলে আবার মারধর করা হয়। তিনি বাঁ পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। অন্যদিকে সেখানে থাকা আরও এক শিক্ষার্থীর ডান হাতের একটি আঙুলের অগ্রভাগ কেটে ফেলা হয়।

ঘটনার এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। তাঁরা সেখানে সাংবাদিকদের রক্ষা করতে পুলিশকে আহ্বান জানান।

সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা আজ সাংবাদিকসহ অন্যদের ওপর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। এই সিন্ডিকেট, যারা আজ সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, তাদের আমরা ছাড় দেব না। আজকের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ ছাত্র-জনতা তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।’