আলোচনা সভা

দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করেছেন আবুল মকসুদ

সৈয়দ আবুল মকসুদের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সৈয়দ আবুল মকসুদের ওয়ালীউল্লাহ্‌-চর্চা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে (বাঁ থেকে) কাজল রশীদ, সৈয়দ আজিজুল হক, আরিফ খান ও মোহাম্মদ আজম। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে
  ছবি: প্রথম আলো

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে; কিন্তু শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে আমরা ক্রমে পিছিয়ে যাচ্ছি। অথচ মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে যে অনেক বড় কাজ করা যায়, সৈয়দ আবুল মকসুদ তা করে দেখিয়ে গেছেন। তাঁর মতো আকণ্ঠ নিমজ্জিত গবেষক যে সমাজে যত বেশি থাকবে, সে সমাজ তত বেশি উপকৃত হবে।

প্রয়াত সাংবাদিক, কলাম লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সৈয়দ আবুল মকসুদের ওয়ালীউল্লাহ-চর্চা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সৈয়দ আবুল মকসুদ স্মৃতি সংসদ।

সৈয়দ আবুল মকসুদের লেখা জীবনীগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘ভাসানী কাহিনী’, ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য’ ও ‘নবাব সলিমুল্লাহ ও তাঁর সময়’। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। আবুল মকসুদ দীর্ঘ সময় লেগে থেকে যে জীবনীগ্রন্থ লিখেছেন, সে নিষ্ঠা ও আকণ্ঠ মনোযোগ কোথা থেকে পেয়েছেন, সেটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন প্রবন্ধ উপস্থাপক।

মোহাম্মদ আজম বলেন, আবুল মকসুদের এই নিষ্ঠা ও গবেষণায় দীর্ঘ মেয়াদে লিপ্ততার পেছনে প্রধানত কাজ করেছে একজন বড় মানুষের সুরত বা অবয়ব খাড়া করা, যা সমাজের অন্য মানুষদের বড় হতে উৎসাহিত করে।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ও সৈয়দ আবুল মকসুদের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা ছিল। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা সবার থাকে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে; কিন্তু শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে আমরা ক্রমে পিছিয়ে যাচ্ছি। যদিও একটা জাতি সামনের দিকে যায় জ্ঞান-বিজ্ঞানচর্চার মধ্য দিয়ে।’

আইনজীবী আরিফ খান বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও আনুকূল্যের বাইরে থেকে জাতি ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে যে অনেক বড় কাজ করা যায় এবং করা উচিত, এটা আবুল মকসুদ করে দেখিয়ে গেছেন। আবুল মকসুদের মতো আকণ্ঠ নিমজ্জিত গবেষক যে সমাজে বেশি থাকবে, সে সমাজ তত বেশি উপকৃত হবে।

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে এখনো আবিষ্কার করে উঠতে পারা যায়নি বলে মনে করেন লেখক ও সাংবাদিক কাজল রশীদ। আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ বলেন, তাঁর বাবা বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে দেখতে চেয়েছেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কবি ও সাংবাদিক ইমরান মাহফুজ।