‘সরকারি কর্মকর্তারা এলে পরিশোধন কেন্দ্র চালু করেন, পরে বন্ধ করে দেন’

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী
ছবি: বাসস

শিল্পবর্জ্যের কারণে তুরাগ নদ ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা পরিদর্শনে গেলে তাঁদের দেখাতে গাজীপুরের কারখানা মালিকেরা পরিশোধন কেন্দ্র চালু করেন। পরে তা আবার বন্ধ করে দেন। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা দেশের ক্ষতি করছেন।

আজ শনিবার দুপুরে টঙ্গী নদীবন্দরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিআইডব্লিউটিএ ইকোপার্ক ও টঙ্গী নদীবন্দর থেকে ঢাকা বৃত্তাকার নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিস উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তৈরি পোশাকশিল্পের কারণে গাজীপুর সারা বিশ্বে পরিচিত, আমাদের গর্বের স্থান গাজীপুর। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এটি একটি অপরিকল্পিত শহরে পরিণত হয়েছে, আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমা হয়। সারা বিশ্বের মানুষ এখানে আসেন, তাঁরা তুরাগ নদীর পানি দিয়ে অজু করেন। আমরা লজ্জিত যে তাঁদের পবিত্র পানি দিতে পারি না। তুরাগ নদকে আমরা ভাগাড়ে পরিণত করেছি।’

গাজীপুরের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের শিল্পবর্জ্য পরিশোধনের কেন্দ্র আছে, না হলে কারখানা করার অনুমতি পেতেন না। কিন্তু আপনারা সরকারি কর্মকর্তারা এলে পরিশোধন কেন্দ্র চালু করেন, তাঁরা চলে গেলে আবার বন্ধ করে দেন। এভাবে আপনারা তাঁদের ফাঁকি দিচ্ছেন, নিজেকে ফাঁকি দিচ্ছেন, দেশের ক্ষতি করছেন।’

অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘গাজীপুরে তুরাগ নদ, বালু নদী, জিরাই খাল ও পাশের শীতলক্ষ্যা নদী আছে। আমরা এগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করছি। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী একটু বেশি লাভের আশায় নদীতে শিল্পবর্জ্য ফেলে নদীর ক্ষতি করছে।’

গাজীপুর জেলায় তিন হাজারের মতো কারখানা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা শিল্পবর্জ্য পরিশোধন কেন্দ্র তৈরি করেন, কিন্তু সেটা চালান না। কারখানাগুলো থেকে পাঁচ শতাংশ বর্জ্যও নদীতে ফেললে নদী রক্ষা করা সম্ভব নয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক। অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে ইকোপার্ক সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটি গাজীপুরের প্রথম ইকোপার্ক। পার্কটির নাম হবে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার ইকোপার্ক। অন্যদিকে প্রাথমিকভাবে দুটি নৌরুটে চারটি স্পিডবোটের মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন করা হবে। রোড দুটি হচ্ছে টঙ্গী থেকে কড্ডা ও টঙ্গী থেকে উলুখোলা।