গুলশানে অগ্নিকাণ্ড

অনাগত সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারলেন না আনোয়ার

গুলশানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা গেছেন আনোয়ার হোসেন
ফাইল ছবি

রাজধানীর গুলশানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যাওয়া যুবক আনোয়ার হোসেনের বাড়ি ভোলায়। তাঁর পরিবার গ্রামে থাকে। স্ত্রী আমেনা বেগম অন্তঃসত্ত্বা। অনাগত সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারলেন না আনোয়ার।

গতকাল রোববার দিবাগত রাত ২টার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আনোয়ারের মরদেহ শনাক্ত করেন তাঁর বড় বোন বিলকিস খাতুন ও ছোট ভাই জুলহাস। এ সময় জুলহাস বলেন, তাঁর ভাই আনোয়ার গুলশানে থাকতেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ফাহিম সিনহার বাসায় বাবুর্চির কাজ ও বাজার করতেন।

ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার দিদারুল্লা গ্রামের কৃষক নুর ইসলামের ছেলে আনোয়ার হোসেন। স্ত্রী আমেনা বেগম সেখানেই থাকেন। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে আনোয়ার ছিলেন তৃতীয়।

জুলহাস বলেন, টিভিতে সংবাদ দেখে তিনি ও তাঁর বোন ঢাকা মেডিকেলে ছুটে এসেছেন। পরে ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করেছেন।

গুলশান থানার উপপরিদর্শক বাবলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আগুন লাগার পর ওই ভবন থেকে লাফিয়ে বা পড়ে গিয়ে আনোয়ার হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই ময়নাতদন্ত ছাড়া তাঁর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের ১০৪ নম্বর সড়কের ২/এ হোল্ডিংয়ের ১৪ তলা ভবনের ১১ তলায় আগুন লাগে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত এই একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আগুন লাগার পর ভবনের বিভিন্ন তলা থেকে ২২ জনকে উদ্ধার করে আশপাশের হাসপাতালে পাঠানো হয়। লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।

ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৯টি ইউনিটের প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পাশাপাশি বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার দিয়ে ভবনের বাসিন্দাদের উদ্ধার করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও সেখানে কাজ করে। সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধারকাজে অংশ নেন।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, এখন পর্যন্ত কীভাবে আগুনের সূত্রপাত, সেটি জানা সম্ভব হয়নি। তদন্তে এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ বেরিয়ে আসবে। ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।