রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনের ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার রাজউকের এক অফিস আদেশে এ কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়। সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মো. মমিন উদ্দিন স্বাক্ষরিত ওই অফিস আদেশে বলা হয়েছে, আগুন লাগা ভবনটির নকশা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া পরীক্ষা করে দেখবে তদন্ত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ত্রুটি পেলে তা শনাক্ত করবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করবে।
কমিটি গঠনের সাত কর্মদিবসের মধ্যে রাজউকের চেয়ারম্যান (সচিব) বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা দিয়ে অফিস আদেশে বলা হয়েছে, তদন্তের প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ করতে পারবে কমিটি। এ ছাড়া প্রয়োজনে কোনো কর্মকর্তা বা পেশাজীবীকে কমিটির সদস্য হিসেবে যুক্ত করা যাবে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের একটি সাততলা ভবনে আগুন লাগে। আগুনে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও ১২ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪২ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। চারজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ, একটি জুস বার (ফলের রস বিক্রির দোকান) ও একটি চা-কফি বিক্রির দোকান ছিল। ছিল মুঠোফোন ও ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম এবং পোশাক বিক্রির দোকানও। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের বরাতে র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন জানিয়েছেন, ভবনে অনেকগুলো গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় সেগুলো বিস্ফোরিত হয়ে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায়।
রাজউকের নগর–পরিকল্পনাবিদ ও বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) প্রকল্পের পরিচালক আশরাফুল ইসলাম শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ভবনটির এক থেকে সাততলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। তবে তা শুধু অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহারের জন্য। রেস্তোরাঁ, শোরুম (বিক্রয়কেন্দ্র) বা অন্য কিছু করার জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
রাজউক যেমন বলছে যে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ বা পোশাকের দোকানের অনুমোদন ছিল না, তেমনি ফায়ার সার্ভিসও বলছে, ভবনটিতে অগ্নিনিরাপত্তায় ঘাটতি ছিল। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন শুক্রবার বলেন, ভবনটিতে অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।