বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করার ওপর জোর দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি এ জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বয়ে একটি কার্যকরী পরামর্শক কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিমান-ঢাকা ট্রাভেল মার্ট ২০২৪’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম এ আহ্বান জানান।
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র বলেন, ‘বর্তমান যুগ ব্র্যান্ডিংয়ের যুগ। বহির্বিশ্বে আমাদের ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরে আমরা বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করতে পারি। বিশ্বের বুকে একমাত্র বাংলাদেশই মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন করেছে। ভাষাশহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আমাদের যে জাতীয় শহীদ মিনার, এটি সবাইকে জানাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে জানাতে হবে।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। এটি বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। গত বছর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আমরা ভলিবল ফেডারেশন থেকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক বিচ ভলিবল বাছাইপর্বের খেলার আয়োজন করেছি। আন্তর্জাতিক ভলিবল ফেডারেশনের পর্যবেক্ষক দল জানিয়েছে, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের বালুর ধরন, আবহাওয়া এবং সার্বিক পরিবেশ ভলিবল খেলার জন্য খুবই উপযোগী। ভবিষ্যতে কক্সবাজারে আরও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে তারা। এভাবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে হবে।’
বক্তৃতা শেষে আতিকুল ইসলাম পর্যটন মেলার শুভ উদ্বোধন করেন। পরে তিনি মেলার স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন; বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী শফিউল আজিম; এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম; বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক; বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী আবু তাহির মোহাম্মদ জাবির; ট্যুরিস্ট পুলিশ বাংলাদেশের ডিআইজি আবু কালাম সিদ্দিক; বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম প্রমুখ।
আয়োজকেরা জানান, দেশ-বিদেশের ৮০টির বেশি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা শতাধিক স্টল ও প্যাভিলিয়নে তাদের পণ্য ও সেবা উপস্থাপন করছে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছে এয়ারলাইনস, হোটেল, রিসোর্ট, ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল ট্যুরিজম এজেন্সিসহ ভ্রমণ ও পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মেলা চলাকালে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য ও সেবার ওপর দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ মূল্যছাড় অফার করছে। মূল্যছাড়ের আওতায় রয়েছে এয়ার টিকিট, হোটেল ও রিসোর্ট আবাসন, ভ্রমণ প্যাকেজ ইত্যাদি।
পর্যটন মেলাটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য রাখা হয়েছে জনপ্রতি ৫০ টাকা। মেলার সমাপনী দিনে দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে প্রবেশ টিকিটের ওপর গ্র্যান্ড র্যাফল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। পুরস্কারের মধ্যে থাকবে জেদ্দা, মদিনা, মালদ্বীপ, দুবাই, ব্যাংকক, দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, কক্সবাজার, সিলেট ও চট্টগ্রাম ভ্রমণের জন্য আসা-যাওয়ার টিকিট। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বান্দরবান ও কুয়াকাটায় বিভিন্ন তারকা হোটেল ও রিসোর্টে আবাসন, দুজনের জন্য ডিনার কুপন ইত্যাদি।