ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের অব্যাহত ‘অপেশাদার আচরণ ও দুর্ব্যবহারে’ বিরক্ত হয়ে সংস্থাটির আরেক প্রকৌশলীর কাছে চিঠি দিয়েছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সাতত্য। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সাড়ে তিন বছর ধরে সেবার বিপরীতে কোনো ধরনের বিল পাচ্ছে না তারা। এরপরও সিটি করপোরেশনকে উন্নয়নমূলককাজে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছিল, কিন্তু তারা এই সেবা আর দিতে চায় না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে (২য় সংশোধিত) পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে কাজ করছে সাতত্য ও জেপিজেড নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সাতত্য প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার স্থপতি রফিক আজম। প্রধান প্রকৌশলীর আচরণে বিরক্ত হয়ে তিনি প্রকল্পের পরিচালক ও দক্ষিণ সিটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরকে গতকাল মঙ্গলবার এ চিঠি দিয়েছেন।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৯টি পার্ক ও ১২টি খেলার মাঠের উন্নয়নকাজ হচ্ছে। এসব পার্ক ও খেলার মাঠের উন্নয়নকাজে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে সাতত্য। ওসমানী উদ্যানের উন্নয়নকাজেরও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান তারা। এই উদ্যানের উন্নয়নকাজ নিয়ে একটি বৈঠকে সাতত্যের প্রতিনিধি প্রকৌশলী ইলিয়াছ মিয়া অংশ নিলে দক্ষিণ সিটির প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাঁকে সভাকক্ষ থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে স্থপতি রফিক আজম প্রথম আলোকে বলেন, দক্ষিণ সিটির সঙ্গে তাঁদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের জুন মাসে। এরপরও নগরের সৌন্দর্যবর্ধনে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে তাঁরা সিটি করপোরেশনকে সহযোগিতা করে আসছেন, কিন্তু সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী তাঁদের প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সব সময় খারাপ আচরণ করছেন, দুর্ব্যবহার করেন। সর্বশেষ একটি বৈঠকে অংশ নিতে গেলে তাঁর প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ইলিয়াছ মিয়াকে দক্ষিণ সিটির প্রধান প্রকৌশলী সভাকক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আশিকুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলে তাঁর নম্বরে সংযোগ পাওয়া যায়নি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন লিখে পাঠালেও তিনি এর জবাব দেননি।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে প্রায় তিন কোটি টাকা বিল বকেয়া থাকার পরও কাজে সহযোগিতা করে আসছেন জানিয়ে স্থপতি রফিক আজম বলেন, ‘আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছি, আমাদের টাকা পরে দিলেও সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের যাতে বেইজ্জতি করা না হয়। প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান সব সময় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অপেশাদারি আচরণ করেন।’ তাঁর এমন অসম্মানজনক আচরণ তাঁরা মেনে নিতে না পেরে বিষয়টি লিখিত আকারে জানিয়েছেন।
চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে খায়রুল বাকের প্রথম আলোকে বলেন, করপোরেশনের ভেতরের নথি তো বাইরে যাওয়ার কথা নয়। এই চিঠি কীভাবে এই প্রতিবেদক পেয়েছেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নন বলে জানান বাকের।