শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকার প্রতিটি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা উদ্যাপনের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মইনুল হাসান। আজ মঙ্গলবার সকালে শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপন উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ডিএমপির পক্ষ থেকে নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ডিএমপি কমিশনারের বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছর ঢাকা মহানগরের ২৫৩টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৩১টি ও উত্তর সিটিতে ১২২টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পূজামণ্ডপের নিরাপত্তাব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার মইনুল হাসান বলেন, ঢাকা মহানগরের প্রতিটি পূজামণ্ডপে স্থায়ীভাবে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি থানা-পুলিশ টহল ও চেকপোস্ট ব্যবস্থা এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা ও মেটাল ডিটেকটরের মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আয়োজকদের মধ্যে থেকে প্রতিটি পূজামণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক দল থাকবে। সাদাপোশাকে ডিবি (গোয়েন্দা) সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখার পাশাপাশি প্রতিটি পূজামণ্ডপে আনসার বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী ও র্যাব সদস্যরা টহল কার্যক্রম ও অন্যান্য নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
দুর্গাপূজায় ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পূজার দিনগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা রাখা হয়েছে। তবে পুরান ঢাকার দিকে রাস্তা সরু হওয়ার কারণে সেখানে যান চলাচলে কিছুটা অসুবিধা হতে পারে। এ জন্য পূজা উদ্যাপন কমিটিকে অনুরোধ করা হয়েছে, পূজামণ্ডপের কাছাকাছি যেন কোনো মেলা বা জনসমাবেশ না হয়, সে ব্যবস্থা করার জন্য।
মইনুল হাসান বলেন, ১৩ অক্টোবর (রোববার) বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হবে। এ জন্য পোস্তগোলা শ্মশানঘাট-সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদী, ওয়াইজঘাট, ডেমরা শীতলক্ষ্যা নদীসহ ১৫টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। বিসর্জন শোভাযাত্রায়ও পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। এ জন্য নৌ পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেডসহ অন্যরা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯-এর মাধ্যমেও সেবা গ্রহণ করা যাবে।
বিসর্জনের সব কার্যক্রম সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে শেষ করার অনুরোধ জানিয়ে ঢাকার পুলিশ কমিশনার বলেন, পূজামণ্ডপ, বিসর্জন শোভাযাত্রা ও বিসর্জনের সময় সব ধরনের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ।
একই সঙ্গে পটকা ও আতশবাজির ব্যবহার না করা এবং বিসর্জন শোভাযাত্রায় উচ্চ স্বরে সাউন্ড সিস্টেম না ব্যবহার করার জন্যও অনুরোধ করেন ডিএমপি কমিশনার।
এর আগে ডিএমপির সিটিটিসির সোয়াট, বোম ডিসপোজাল টিম ও কে-নাইন টিম উদ্ভূত জরুরি পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া হবে, তার একটা মহড়া প্রদর্শন করে।
এ সময় পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতা, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ইসরাইল হাওলাদার, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান, অতিরিক্ত কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।