বিশাল আকৃতির দেহ। শিং দুটো দেখতে ধারালো চাকুর মতো। গলা ও পেছনের অংশ কিছুটা কালো, বাকি শরীর সাদা। সবল এই প্রাণীটির নাম গয়াল। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র–সংলগ্ন মাঠে আজ শনিবার শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীতে গয়ালটি এনেছে নারায়ণগঞ্জের যাত্রামুড়ার সিয়ান অ্যাগ্রো।
বন্য গরুর একটি প্রজাতি এই গয়াল দেখতে অনেকেই ভিড় করছিলেন। এমন একজন মঞ্জুরুল ইসলাম। তিনি ঢাকার সাভার থেকে প্রদর্শনীতে এসেছেন। মঞ্জুরুল প্রথম আলোকে বলেন, গয়াল অনেক শক্তিশালী হয়। এটিও তেমন। গয়াল সাধারণত দেখা যায় না। স্বচক্ষে এটি দেখতে পেয়ে ভালো লাগছে।
সকাল ১০টায় দর্শনার্থীদের জন্য ফটক খুলে দেওয়া হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত প্রদর্শনী চলছে। দর্শনার্থীদের জন্য কোনো প্রবেশ ফ্রি নেই। রোববার প্রদর্শনী শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সিয়ান অ্যাগ্রোর কর্ণধার আতিকুর রহমান জানান, তাঁর খামারে এই একটি গয়ালই আছে। এটি তিনি চট্টগ্রামের একটি খামার থেকে কিনেছিলেন।
গয়ালের মতো সচরাচর দেখা যায় না, এমন অনেক গবাদিপশুর দেখা পাওয়া যাবে এ প্রদর্শনীতে। এ আয়োজনে ৩০০টি স্টল আছে। সারা দেশ থেকে খামারিরা পশুপাখি নিয়ে এতে অংশ নিচ্ছেন।
প্রদর্শনীস্থলে প্রবেশের পর ডান পাশের স্টলগুলোতে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, ভুট্টি, ঘোড়া, দুম্বার দেখা পাওয়া যায়। এখানে ১ হাজার ১০০ কেজির বেশি ওজনের যেমন সংকর ষাঁড় রয়েছে, তেমনি ২৫–৩০ কেজি ওজনের ভুট্টিও রয়েছে। ভুট্টি বা খর্বাকৃতির বেশ কিছু গরু আনা হয়েছে এখানে।
গয়ালের মতো সচরাচর দেখা যায় না এমন অনেক গবাদিপশুর দেখা পাওয়া যাবে এ প্রদর্শনীতে। এ আয়োজনে ৩০০টি স্টল আছে। সারা দেশ থেকে খামারিরা পশুপাখি নিয়ে এতে অংশ নিচ্ছেন।
দর্শনার্থীদের কয়েকজন জানান, এত ছোট আকারের ভুট্টি তাঁরা আগে কখনো দেখেননি। দুম্বার কথা বরাবরই শুনে এলেও তাঁরা এর আগে দেখেননি প্রাণীটি। এই প্রদর্শনীতে এসে তাঁদের প্রাণীটি দেখার সুযোগ হলো।
বেশ কয়েকটি স্টলে দুম্বাও দেখা যাবে। বগুড়ার ভান্ডার অ্যাগ্রোর স্টলে গেলেও কালো-সাদা বর্ণের দুম্বার দেখা পাওয়া যাবে।
প্রদর্শনীস্থলে প্রবেশ করার পর বাঁ পাশের স্টলগুলোতে কুকুর, বিড়াল, হাঁস, মুরগি, কবুতরসহ নানা প্রজাতির প্রাণীর দেখা মেলে।
জায়েন আসিলের স্টলে চারটি মোরগ ও দুটি মুরগি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ইরাকুত লাখা নামের সাত বছর বয়সী একটি মুরগির দাম ২৫ হাজার টাকা বলে জানালেন স্টলটির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। তাঁরা জানান, এসব মুরগি লড়াই করে। বিদেশ থেকে আনতে হয়। তাই দাম বেশি।
৪০ হাজার টাকার জোড়া কবুতর রয়েছে সাঈদ বাশার পিজন হোমের স্টলে। সেখানকার কর্মীরা জানান, তাঁদের খামারে আড়াই লাখ টাকা দামের কবুতরও রয়েছে। তবে সেসব এখানে আনা হয়নি।
এ আয়োজনে মাংস, দুগ্ধজাত পণ্যের খাবারের দোকানও আছে। রয়েছে ওষুধ, বীজসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর স্টলও। অবশ্য বেশ কিছু স্টল ফাঁকা থাকতেও দেখা গেছে।
এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ), বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) ও প্রাণিসম্পদ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন।
ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ১০টায় দর্শনার্থীদের জন্য ফটক খুলে দেওয়া হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত প্রদর্শনী চলছে। দর্শনার্থীদের জন্য কোনো প্রবেশ ফ্রি নেই।
প্রথম দিন প্রদর্শনী ঘুরে দেখা যায়, অনেকেই পশুপাখি দেখতে এসেছেন। বিকেলের দিকে ভিড় কিছুটা বাড়তি ছিল।
আজ শনিবার সকালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। আগামীকাল রোববার প্রদর্শনী শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।