দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু এটি। গতকাল ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে চলতি মাসের ২৯ দিনে ডেঙ্গুতে ৭৫ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে আটটি শিশু।
আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা) ডেঙ্গু নিয়ে ১ হাজার ২২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড এটি। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া আটজনের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে পাঁচজন এবং ঢাকা উত্তর সিটি, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে একজন করে ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২৬৭ রোগী ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ২২৮ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৬, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮৩, খুলনা বিভাগে ১৩৪, বরিশাল বিভাগে ৭৪, রাজশাহী বিভাগে ৫৩, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৮ ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ২৮ জন ভর্তি হয়েছেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর। তখন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ৩৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেপ্টেম্বরে। ওই সময় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯ হাজার ৭৮৬ জন। আর এ বছর এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫৮ জনের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮৭ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে। এরপর ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ নারী ও ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ।
এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছে ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা। এই বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ১৯২। আর মারা যাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ১৮। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ নারী।