দৌড় কর্মসূচি ‘রোকেয়া রান’-এ অংশগ্রহণকারীরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
দৌড় কর্মসূচি ‘রোকেয়া রান’-এ অংশগ্রহণকারীরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

রোকেয়া দিবসের কর্মসূচি

নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে ‘রোকেয়া রান’ অনুষ্ঠিত

নারী ও কন্যাসন্তানের প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে আজ শনিবার দৌড় কর্মসূচি ‘রোকেয়া রান’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও বিডি রানার্স যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করে। অনুষ্ঠানে অতিথিরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে নারী-পুরুষের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠিত হবে, এমনটাই আশা প্রকাশ করেন।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ পর্যন্ত এই দৌড় কর্মসূচি পালিত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামে জন্ম নেন এবং ১৯৩২ সালের একই দিনে কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর অবদানকে স্মরণ করে ৯ ডিসেম্বর সরকারিভাবে রোকেয়া দিবস পালন করা হয়।

আজ ‘রোকেয়া রান’ অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের প্রথম নারী এভারেস্টজয়ী ও পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার।

‘রোকেয়া রান’ সব জড়তা, ক্লান্তি ও আড়ষ্টতা কাটিয়ে নারীদের বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাক, এই প্রত্যাশা রেখে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ফওজিয়া মোসলেম। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা এগিয়ে যাব বহুদূর। একই সঙ্গে রোকেয়ার অনুসারীরা তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে এগিয়ে যাবেন। সেই দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে সমতা প্রতিষ্ঠিত হবে।’

দৌড় কর্মসূচি ‘রোকেয়া রান’-এ প্রায় ২০০ জন অংশ নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এই উপমহাদেশের, তথা বিশ্বের একজন নারীবাদী, চিন্তক, দার্শনিক ও লেখক। শুধু নারীসমাজের জন্য নয়, নারী-পুরুষ সকলকে নিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা ছিল রোকেয়ার মধ্যে। তাঁর জন্মের এত বছর পর আজকের সমাজ, নারীসমাজ এবং রাষ্ট্র তাঁর ভাবনাকে গ্রহণ করেছে, তা বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে।’

পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার প্রতিবছর এই দিনে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসে আনন্দের সঙ্গে  ‘রোকেয়া রান’ পালন করার আহ্বান জানান। তিনি রোকেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নারী-পুরুষের সমতা অর্জন এবং সহিংসতামুক্ত পরিবার ও সমাজ গড়ার ওপর জোর দেন।

উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে দৌড়ের নিয়মনীতি ও পথ সম্পর্কে জানান বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিউতি সবুর। এরপর সমবেতভাবে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও রোকেয়ার প্রতিকৃতির সামনে প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে ‘রোকেয়া কমিউনিটি রান’-এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

কমিউনিটি দৌড় শেষে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বসুন্ধরা কমিউনিটি, আগারগাঁও কমিউনিটি, অভিযাত্রী কমিউনিটি, চন্দ্রিমা রানার্স ও মিরপুর রানার্সের সদস্যরা। সদস্যরা বলেন, মেয়েদের দৌড়ানোর ক্ষেত্রে নানা বাধাবিপত্তি থাকা সত্ত্বেও অনেক নারী দৌড়ানোর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন।

ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা নারী ও কন্যার প্রতি সব ধরনের সহিংসতামুক্ত পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রগঠনের অঙ্গীকার করেন।

কর্মসূচিতে প্রায় ২০০ জন অংশ নেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা।