হামলায় ইমদাদুল আজাদের ডান চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে
হামলায় ইমদাদুল আজাদের ডান চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে

ফুলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহে শাহবাগে গিয়ে মারধরের শিকার তিন সাংবাদিক

ভালোবাসা দিবসের আগের দিন ফুলের দাম বাড়ার কারণ নিয়ে সংবাদ সংগ্রহে শাহবাগের ফুলের বাজারে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক। তাঁরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) নেতা। এ ঘটনায় তাঁরা শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার তিনজন হলেন রাসেল সরকার (২৫), ইমদাদুল আজাদ (২৪) ও মনিরুল ইসলাম (২৪)। এর মধ্যে রাসেল ডুজার বর্তমান কমিটির সহসভাপতি, ইমদাদুল অর্থ সম্পাদক এবং মনিরুল ডুজার সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য। রাসেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ইমদাদুল রেডিও টুডে আর মনিরুল নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

পুলিশকে দেওয়া লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম। এতে বলা হয়েছে, ‘আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে আমি ও আমার সহকর্মী রাসেল সরকার শাহবাগ মোড়ের ফুল মার্কেটের ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপে ফুলের দাম বাড়ার কারণ বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাই। ওই দোকানে কর্মরত পায়েলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করে দেন এবং আমাদের ভুয়া সাংবাদিক আখ্যায়িত করেন। মৌখিকভাবে এর প্রতিবাদ করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও চড়থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। আমার সহকর্মী রাসেল তার প্রতিবাদ করতে গেলে পায়েল, সাল্লু, আ. রাজ্জাক, বুলু, দিদার, বাবু, জাহাঙ্গীরসহ অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন এসে আমাদের দুজনকে মারধর করেন।’

সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে শাহবাগে ফুলের দোকানিদের হামলার শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ‘মারধরের ঘটনার খবর পেয়ে ইমদাদুল আজাদ (২৪) নামের আমাদের আরেক সহকর্মী সাংবাদিক পরিচয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে ওই ব্যক্তিরা তাঁকেও মারধর করেন এবং বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় আসামিরা পেছন দিক থেকে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এ সময় ইমদাদুল আজাদকে রাস্তায় ফেলে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। এতে তাঁর ডান চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী আমাদের চিনতে পেরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেন এবং ইমদাদুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।’

জানতে চাইলে ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপের মালিক মেরিন শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঢাকার বাইরে আছি। কিন্তু দোকানের কর্মচারীদের কাছ থেকে ফোনে যা জানতে পেরেছি, তা হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিক দোকানে ফুল কিনতে এসেছিলেন। আগামীকাল ভালোবাসা দিবস সামনে রেখে ফুলের দাম একটু বেশি। ফুলের দাম নিয়ে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে কর্মচারীদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মারামারি বেধে যায়। পরে আরও সাংবাদিকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এসে আমার দোকান ভাঙচুর করে তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাজিরুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।