রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে নিয়ে দিয়াবাড়িতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মো. শাকিল আহম্মেদ রুবেলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) বলছে, শাকিল ১ হাজার ৫০০টি ছিনতাই করেছেন। তাঁর ছিনতাইয়ের মূল লক্ষ্য ছিলেন নারীরা। তিনি নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণও করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা রয়েছে।
গতকাল শনিবার চারজনকে গ্রেপ্তারের পর আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ডিবি। গ্রেপ্তার বাকি তিনজন হলেন মো. আকাশ শেখ (২২), দেলোয়ার হোসেন (৫৫) ও মো.হাবিবুর রহমান।
গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে বিদেশি একটি পিস্তল, দুটি গুলি, একটি ম্যাগাজিন, একটি ওয়ারলেস সেট, ‘পুলিশ’ স্টিকারযুক্ত দুটি মোটরসাইকেল ও ছয়টি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবিপ্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ঢাবির ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে ছিনতাইয়ের আগে শাকিল গত ১২ আগস্ট উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই করেন। সেই মোটরসাইকেলে ‘পুলিশ’ স্টিকার লাগিয়ে ঢাবির ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেন।
শাকিলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, শাকিলের বাড়ি গাজীপুর। তবে আরও দুটি ঠিকানা পাওয়া গেছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। শাকিল ঢাকায় কোনো বাসা ভাড়া নেননি। তিনি রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে রুম ভাড়া নিয়ে অবস্থান করতেন।’
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ আরও বলেন, শাকিলের হাতে ওয়াকিটকি, পিস্তল ও গাড়িতে পুলিশের স্টিকার দেখে ঢাবি শিক্ষার্থী তাঁকে পুলিশ বলে ভেবে নেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনুরোধ করব, কেউ পুলিশ পরিচয় দিলে যেন তার মোটরসাইকেলে কেউ উঠে না যায়; তাকে যেন চ্যালেঞ্জ করে এবং তার পরিচয় জানার চেষ্টা করে। কোনো পুলিশ মোটরসাইকেল করে কখনো আসামি নিয়ে যায় না। তাহলে শাকিলের মতো মানুষকে আটকানো যাবে।’
ছিনতাই কি শাকিলের পেশা নাকি নেশা—এমন প্রশ্ন করা হলে ডিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, এটা তাঁর পেশা ও নেশা দুটোই। তিনি পুলিশের ছদ্মবেশে এসব কাজ করছিলেন।
শাকিল রাজধানীর ৩০০ ফিট, দিয়াবাড়ি ও পূর্বাচল এলাকায় ছিনতাইয়ের জন্য মেয়েদের নিয়ে যেতেন বলে জানিয়েছে ডিবি। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছিনতাইয়ের ছয়টি মামলা রয়েছে। তিনি একাধিকবার জেল খেটেছেন। তাঁকে এবং তাঁর সহযোগীদের রিমান্ডে এনে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।