ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, ২৮ অক্টোবর কর্মসূচির আড়ালে যদি কেউ সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করে, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে, তাহলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পাওয়া মেট্রোরেল পুলিশের (এমআরটি) কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উত্তরা উত্তর মেট্রোস্টেশনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান এ কথা বলেন।
বিএনপি ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ডিএমপি কমিশনারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এ মহাসমাবেশ ঘিরে যদি কোনো উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে কীভাবে সামাল দেবে পুলিশ। এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। বাংলাদেশের সংবিধানে যেকোনো রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক আন্দোলন, মিছিল–মিটিং সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে পুলিশ নিরাপত্তাও দিয়ে থাকে। কিন্তু ২৮ অক্টোবর কর্মসূচির আড়ালে যদি কেউ সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করে, ঢাকা ২ কোটি ২৪ লাখ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার শঙ্কা দেখা দেয়, ডিএমপি তা কঠোর হস্তে দমন করবে।’
মহাসমাবেশ ঘিরে গুজব ঠেকাতে ডিএমপির উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়াচ্ছে। শুধু ২৮ অক্টোবর ঘিরেই নয়, অন্যান্য বিষয়েও ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা মনে করি ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ গুজবের বিরুদ্ধে সচেষ্ট থাকবে। ইলেকট্রনিকস ও প্রিন্ট মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। গুজবকে উড়িয়ে দিয়ে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করতে পারব।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আরেকটা শাপলা চত্বর হতে যাচ্ছে। পরিণতি হবে শাপলার চত্বরের চেয়েও ভয়াবহ।’—এ কথা উল্লেখ করে এ ব্যাপারে কোনো গোয়েন্দা তথ্য আছে কি না, জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা নজরদারির ভেতরে রেখেছি। আমাদের পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। এ ব্যাপারে যেকোনো তথ্য যদি আমরা পাই, তবে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ২০১৩–১৪ সালে এ রকমই অপতৎপরতার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেটি শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশেই করা হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ পুলিশ সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করেছে, পরাজিত হয়েছে সন্ত্রাসীরা।’
ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, নিরাপত্তা, গতি, উন্নয়ন সামনে রেখে এমআরটি পুলিশ সম্পূর্ণ আধুনিক অস্ত্র ও যন্ত্রে (গেজেট অ্যান্ড গিয়ার) সজ্জিত হয়ে প্রযুক্তিনির্ভর পুলিশিং করার মাধ্যমে যাত্রীবান্ধব নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
আগামী ৪ নভেম্বর মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর এমআরটি পুলিশ সম্পূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করবে জানিয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মেট্রোরেলের নিরাপত্তার জন্য একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠনের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) অধীন একজন ডিআইজির (উপমহাপরিদর্শক) নেতৃত্বে ২৩১টি পদ সৃষ্টি করা হয়। তবে এ সংখ্যা অপ্রতুল বিবেচনা করে আইজিপির নির্দেশে অতিরিক্ত জনবলসহ মোট ৫৩৭ জনের পদায়ন করা হয়।
ধারাবাহিকভাবে মেট্রোরেলের সব স্টেশনে এমআরটি পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, পরীক্ষামূলক দায়িত্ব পালন থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সংশোধন ও সংযোজন–বিয়োজন করা হবে। ডিএমপির ক্রাইম ইউনিট, ট্রাফিক ইউনিট, সিটিটিসিসহ অন্যান্য ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, এসবিসহ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে।