বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্র ফেডারেশন
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্র ফেডারেশন

ছাত্রলীগকে বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধের দাবি ছাত্র ফেডারেশনের

আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে ছাত্র ফেডারেশন। গণসংহতি আন্দোলনের এই ছাত্রসংগঠনের নেতারা বলেন, এই মুহূর্তে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা রয়েছে। কিন্তু সিদ্ধান্তটিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হলে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধ করতে হবে। আর এটি করতে হবে ছয় মাসের মধ্যেই।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্র ফেডারেশন। সেখানে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায় প্রতিক্রিয়া জানান সংগঠনটির নেতারা।

গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে এই ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।

ছাত্র ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ। এতে তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়। এগুলো হলো, ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা ও গত ১৫ বছরে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সংঘটিত সব সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা; বিশেষ কমিশন গঠন করে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে সংঘটিত প্রত্যেক ছাত্র হত্যার বিচার নিশ্চিত করা এবং জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের পুনর্বাসন নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা দ্রুত নিরসন ও নিহত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে তাঁদের মর্যাদা নিশ্চিত করা।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান। তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছরে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোয় গণরুম-গেস্টরুমে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, পিটিয়ে ছাত্র হত্যা, ধর্ষণসহ এমন কোনো অপরাধ নেই, যার সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত ছিল না। সারা দেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনেও সব সময় প্রধান লাঠিয়ালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল ছাত্রলীগ। তারই ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমাতে সংগঠিত গণহত্যার প্রধান অংশীদারে পরিণত হয় ছাত্রলীগ।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ফারহানা মুনা, ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি আল-আমিন রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্পাদক সাকিবুর রনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।