মোটরযান মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় পুরোনো মোটরযান নিষিদ্ধ করতে ছয় মাস সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার বলছে, পুরোনো মোটরযান অপসারণের জন্য শিগগিরই একটি কার্যকর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পুরোনো মোটরযান অপসারণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা সভা হয়। পরে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, পুরোনো মোটরযান অপসারণের ফলে ঢাকার বায়ুর মানের উন্নতি হবে, যা নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়তা করবে। তিনি আরও বলেন, যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে ঢাকায় শ্বাস নেওয়ার মতো বাতাস থাকবে না। সরকার এমনভাবে কাজ করবে, যাতে দূষণ কমে এবং জনদুর্ভোগ না হয়।
ছয় মাস সময় দেওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পুরোনো মোটরযান হঠাৎ তুলে দিলে যাত্রীদের সমস্যা হবে বলে পরিবহনের মালিকেরা জানিয়েছেন। নতুন বাস নামানোর জন্য সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পাওয়া যাবে কি না, সেই বিষয়েও তাঁরা বলেছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এ জন্যই ছয় মাসের সময় দেওয়া হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ডিসেম্বর থেকে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রচার শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করে পুলিশকে জরিমানা করার ক্ষমতা দেওয়া হবে। দূষণকারীদের জরিমানা করা হবে, যা ব্যাংকে জমা করতে হবে। চালকেরা যাতে অযথা হর্ন না বাজান, সে বিষয়ে পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, পুরোনো মোটরযান অপসারণের জন্য সরকার শিগগিরই একটি কার্যকর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে, যা শহরের যানজট ও দূষণ কমাতে সহায়ক হবে।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচলের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ফাওজুল কবির খান বলেন, তাঁরা যেকোনো দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবেন না। তবে জনদুর্ভোগ যাতে না হয়, তা বিবেচনায় নিতে হবে। এ ছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশার সঙ্গে কিছু মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। সব দিক বিবেচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে জাদুর চেরাগ নেই। কালই যানজট ও দূষণমুক্ত করে দেব, এমনটা হয়তো হবে না। তবে পর্যায়ক্রমে উন্নতি দেখতে পাবেন। শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ ও যানজট কমবে।’
২০ থেকে ২৫ বছরের পুরোনো ও ফিটনেসবিহীন বাস, মিনিবাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ পুরোনো মোটরযান রাস্তা থেকে অপসারণ করার লক্ষ্যে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. এহসানুল হকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।