ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। ফাইরুজ অবন্তিকা নামের ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়টির আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে ফাইরুজ রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। ফাইরুজের কয়েকজন বন্ধু জানিয়েছেন, তিনি ফেসবুক পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহপাঠীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের নিপীড়নের অভিযোগ করেন। ওই পোস্টে একজন সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে ছেলেটির পক্ষ নিয়ে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগও করেছেন তিনি। সেখানেই আত্মহত্যার কথা বলেন ফাইরুজ।
ফাইরুজের ওই পোস্ট দেখে ঢাকা থেকে সহপাঠীরা ফোন করলে পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে একজন জানান, পরিবারের সদস্যরা ও কুমিল্লায় অবস্থানরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ঝুলন্ত অবস্থায় ফাইরুজকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফাইরুজের লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ মর্গে রয়েছে বলে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ হোসেন জানিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ওই ছাত্রী আত্মহত্যার আগে একটি নোট লিখে গেছেন। পুলিশ হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে গেছে। তদন্ত করে মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন করা হবে।
ফাইরুজের আত্মহত্যার খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। ক্যাম্পাসে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ অবস্থায় ফাইরুজের ওই সহপাঠীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার এবং ওই সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অভিযুক্ত ছাত্রের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ওই সহকারী প্রক্টর প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনাটি দুই থেকে দেড় বছর আগের, তখন অবন্তিকার বিরুদ্ধে তার সহপাঠীরা ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে থানায় জিডি করেছিল। ওই অভিযোগ তদন্তে আমাদের এখানে একটি কমিটি করা হয়েছিল। তার সঙ্গে কখনোই আমি একা কিছু করিনি।’
মেয়েটির আত্মহত্যা এবং সহপাঠী ও সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে বলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, উপাচার্যের নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে ওই ছাত্রকে বহিষ্কার এবং সহকারী প্রক্টরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে বিধি মোতাবেক তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।