গান, আবৃত্তি, নৃত্য, সংবর্ধনা ও আলোচনার মধ্য দিয়ে শুরু হলো তিন দিনের জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী ও বরেণ্য সংগীতশিল্পী, সংস্কৃতিজন কলিম শরাফীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এ উৎসব আয়োজন করেছে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’ গানের সঙ্গে শিবলী মহম্মদ ও শামীম আরা নিপার নেতৃত্বে নৃত্যাঞ্চলের শিল্পীদের সমবেত নৃত্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তারা মিলনায়তনের প্রাঙ্গণে নৃত্য পরিবেশন করে অতিথিদের স্বাগত জানান।
উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। আলোচক ছিলেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমদ ও আলোকচিত্রী এম এ তাহের। পরে ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ গানের সঙ্গে অতিথিরা মিলনায়তনের লবিতে ফুল দিয়ে সাজানো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিকৃতির সামনে প্রদীপ প্রজ্বালন করেন। এরপর মঞ্চে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার আয়োজনে এবার ৩৫তম বারের মতো জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা উৎসব করা হয়েছে সম্প্রতি প্রয়াত বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের স্মৃতির প্রতি। এবার উৎসবে ঢাকাসহ দেশের দেড় শতাধিক নবীন ও খ্যাতিমান শিল্পীরা অংশ নিচ্ছেন।
সংস্থার নির্বাহী সভাপতি শিল্পী আমিনা আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পীযূষ বড়ুয়া। অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে ভারত সরকারের দেওয়া পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আলোচকেরা রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিল্পী কলিম শরাফী ও শিল্পী সাদি মহম্মদের জীবন ও সংগীত সাধনা নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল একক সংগীত ও আবৃত্তির পর্ব। এ পর্ব শুরু হয় ময়মনসিংহের শিল্পী অঞ্জনা সরকারের গাওয়া ‘লুকালে বলে’ গানটি দিয়ে। পরে চঞ্চল খান গেয়েছেন ‘আমার খেলা যখন’। প্রথম দিনে ঢাকা ও বিভিন্ন জেলার ২৬ শিল্পী একক পরিবেশনায় অংশ নেন।
শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে দুটি অধিবেশন হবে। সকাল সাড়ে নয়টায় প্রভাতি অধিবেশন শুরু হবে। এতে থাকবে সংগীত ভবন, রবিরাগ, সুরের ধারা, বৈতালিক, বাফা, সুরতীর্থ ও বিশ্ববীণার শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনা। বিকেল পাঁচটা থেকে দ্বিতীয় অধিবেশনে থাকে সংগীত ও আবৃত্তি।
শনিবারে সমাপনী দিনের অধিবেশন শুরু হবে বিকেল পাঁচটায়, থাকবে বিশিষ্ট শিল্পীদের একক পরিবেশনা। অনুষ্ঠান সবার জন্য উন্মুক্ত।