চট্টগ্রামে সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ নিহতের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজা পড়া হয়েছে। পরে শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব লোহাগাড়া সাতকানিয়া উপজেলা’ ব্যানারে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরাও যুক্ত হন।
রাত সাড়ে নয়টার দিকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকায় জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে সোয়া ১০টার দিকে তাঁরা সেখানে গায়েবানা জানাজা পড়েন। জানাজা শেষে ভিসি চত্বরে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি তুলে ধরেন। এ সময় তাঁরা বলেন, যারাই মসজিদে, মন্দিরে হামলা করে অপবাদ চালাবে, যারা দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চায়, তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম (৩৫) নিহত হন। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির উদ্দিন রিয়ন বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার তারা সারা বাংলাদেশের আনাচকানাচে তাণ্ডব চালিয়েছে। আর আজ তারা চট্টগ্রামে মসজিদে হামলা করেছে। তারা আইনজীবীকে হত্যা করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেইমানি করে কেউ যদি এ দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চায়, মুজিববাদ কায়েম করতে চায়, এই দেশের ছাত্র–জনতা তাদের অস্তিত্ব রাখবে না। অবিলম্বে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদাসসির বলেন, ‘এ দেশে কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইলে তাদের বিষদাঁত আমরা ভেঙে ফেলব। তাদের আমরা এই দেশ থেকে বিতাড়িত করব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে এখানে কোনো মুসলিম ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়নি, এখানে একজন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। যারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের সকলের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সনাতন ভাই-বোনদের কাছে বলতে চাই, এটাকে কেউ সাম্প্রদায়িক বিষয় হিসেবে দেখবেন না। সনাতনীরা কখনোই ইসকনকে সাপোর্ট করতে পারে না। ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি আপনাদের পক্ষ থেকেও ওঠা উচিত।’
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আজিজুল হক চার দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; বাংলাদেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ইসকনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে; কারা ইসকনকে টাকা দেয়, সেটার উৎস খুঁজে বের করতে হবে এবং এসব বিষয়ে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।