‘অধিকার এখানে, এখনই’ শীর্ষক তারুণ্যের উৎসবে বক্তারা তরুণদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর
‘অধিকার এখানে, এখনই’ শীর্ষক তারুণ্যের উৎসবে বক্তারা তরুণদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর

ব্র্যাকের তারুণ্য উৎসবে বক্তারা

তরুণদের সার্বিক অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সমাজের পরিবর্তন সম্ভব

দেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে তরুণদের সচেষ্ট হতে হবে। তাঁদের সার্বিক অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সমাজের পরিবর্তন সম্ভব। নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকলে এই তরুণেরাই ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবেন।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির (এসইএলপি) প্রকল্প ‘রাইট হেয়ার রাইট নাউ (আরএইচআরএন)’ বা ‘অধিকার এখানে, এখনই’ শীর্ষক তারুণ্যের উৎসবে বক্তাদের আলোচনায় কথাগুলো উঠে এসেছে। উৎসবের প্রতিপাদ্য ছিল ‘পরিবর্তনের জন্য একসঙ্গে’।

বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও লিংকরোডে অবস্থিত আলোকি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এই উৎসবে উপস্থিত ছিলেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আগত প্রায় ৩৫০ তরুণ প্রতিনিধি। শুধু সরকারি চাকরিতে নয়, দেশের সব ক্ষেত্র থেকে বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন তাঁরা। জানান দেশ নিয়ে নানান স্বপ্ন ও শঙ্কার কথাও।

উৎসবের উদ্বোধনী পবে৴ দেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলায় তরুণদের সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর (ঊর্ধ্বতন পরিচালক) কে এ এম মোর্শেদ। তিনি বলেন, যুবসমাজের সার্বিক অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সমাজের সব স্তরে পরিবর্তন আনা সম্ভব। ‘অধিকার এখানেই, এখনই’ কর্মসূচিটি তরুণদের নেতৃত্ব গ্রহণের সক্ষমতা তৈরি করে সমাজের এই পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়নে সহায়তা করে।

আয়োজক ও অতিথিদের সঙ্গে তরুণদের একাংশ। ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর

রিপ্রোডাকটিভ হেলথ সার্ভিসেস ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রামের (আরএইচস্টেপ) উপপরিচালক এলভিনা মুস্তারি বলেন, তরুণসমাজ শুধু ভবিষ্যৎ নয়, তাঁরা বর্তমানের চালিকা শক্তি। তাঁদের সঠিক তথ্য দিয়ে, সমতার ভিত্তিতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যসচেতনতার মাধ্যমে ক্ষমতায়িত করা জরুরি। নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকলে এই তরুণেরাই ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবেন।

এসইএলপি কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, ‘তরুণেরা ভবিষ্যতের কারিগর। টেকসই পরিবর্তনের লক্ষ্যে তারা যে কাজ করতে চায়, আমি বিশ্বাস করি, তরুণ–তরুণীরা সেটি পারবে।’

উৎসবের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল পাবলিক প্লেসে (জনপরিসর) নারী ও কন্যাশিশুদের নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে একটি প্যানেল আলোচনা। এই পব৴ সঞ্চালনা করেন শাশ্বতী বিপ্লব। সেখানে তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি সরকারি ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

তরুণেরা দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকছেন। ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর

তরুণদের মধ্য থেকে নিজ নিজ সাফল্যের গল্প তুলে ধরেন আরএইচআরএন প্রকল্পের দুই যুব সদস্য এস এম সাজ্জাদ উল ইসলাম ও সুমন আচায৴।

উৎসবে গল্প বলা, মানসিক সুস্থতা, ডিজিটাল অ্যাডভোকেসি এবং আত্মরক্ষার কৌশলসহ বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মশালায় অংশ নেন তরুণেরা। এ ছাড়া শিল্পকর্ম প্রদর্শনী, গ্রাফিতি ওয়াল এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদশ৴নীরও ব্যবস্থা ছিল।

তরুণ উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদশ৴নী করা হয় উৎসবে। ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর

শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের হাতে তৈরি কারুশিল্প প্রদর্শন করা হয় ‘যত্নের দোকান’ নামের একটি স্টলে। এ ছাড়া ব্র্যাকের ক্যারিয়ার হাব, শেয়ার-নেট, নিউটনস আর্কাইভ, মিনডালা ডট এম এবং আর্টিস্টিক লাইফের স্টল ছিল উৎসবে।

উৎসবের শেষ পর্ব সাজানো হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে। এ সময় নাটক পরিবেশন করে পপুলার থিয়েটার, সংগীত পরিবেশন করেন তরুণ শিল্পীরা।