সাম্প্রদায়িক উগ্রতায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার বিষয়ে একমত হয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও লিবারেল ইসলামিক জোটের নেতারা।
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘুদের নির্ভয়ে–নির্বিঘ্নে ভোটদান ও নির্বাচনের পূর্বাপর পরিস্থিতি সম্পর্কে দুই সংগঠনের মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিজয়নগরে এ সভা হয়।
সভায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতার মধ্যে বাস করতে চাই না। ধর্মীয় উগ্রতা কোথায় ঘটছে, এর সঙ্গে কারা যুক্ত, তাদের অবস্থানও চিহ্নিত করা প্রয়োজন। শান্তিতে ধর্মীয় উৎসব পালন করতে অন্য ধর্মাবলম্বীদের সহমর্মিতা ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।’
লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়। আপনারা ভয় পাবেন না। সংঘবদ্ধভাবে আমরা আগে দাঁড়াতে পারিনি। তবে এখন ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা চিহ্নিত করতে চাই, যারা ধর্মীয় উগ্রতা উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। এমনকি আমাদের জোটে যদি অন্য কোনো ধর্মের মানুষ বা দলও যুক্ত হতে চায়, তাদের যুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ জানাব।’
সভায় বক্তারা বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা ও দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের উদ্বেগ অনেক দিন থেকেই। কারণ, নির্বাচন ও পূজা উপলক্ষে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন প্রতিনিয়ত ঘটেছে। পূর্বে সাম্প্রদায়িকতা রাষ্ট্রীয় মদদেও হয়েছিল। প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে অনেক সময় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ জন্য এসব উগ্রতায় যারা সম্পৃক্ত, তাদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
সভায় লিবারেল ইসলামিক জোটের হয়ে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ও জোটের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দীন আহমদ, আশিকীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলম নূরী আল সুরেশ্বরী, বাংলাদেশ জনদলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, কৃষক শ্রমিক পার্টির চেয়ারম্যান ফারনাজ হক, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ ভাসানী) চেয়ারম্যান হাসরত খান।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের হয়ে বক্তব্য দেন পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জন কর্মকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত কুমার দেব, প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, রমেন মণ্ডল।
পরে দুই সংগঠনে সমন্বয়ের জন্য ছয় সদস্যের একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়। ২১ অক্টোবর লিবারেল ইসলামিক জোটের মহাসমাবেশ ও ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মহাসমাবেশে একে অপরকে আমন্ত্রণ জানান নেতারা।