টানা কয়েক সপ্তাহের তাপপ্রবাহের পর স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজল রাজধানী ঢাকা। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত ১২টার দিকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি ঝরেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর নতুন নতুন এলাকায় বৃষ্টি নেমেছে। এতে গরম কমে আবহাওয়া শীতল হয়েছে।
রাত ১২টার পর মিরপুর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর, বিমানবন্দরসহ আশপাশের এলাকায় বেশ বৃষ্টি হয়। রাত সোয়া ১টার পর ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, ধানমণ্ডি এলাকায়ও বৃষ্টি শুরু হয়।
ঢাকায় বৃষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আগারগাঁও ও বিমানবন্দর এলাকায় তাঁদের বৃষ্টি পর্যবেক্ষণের যন্ত্র রয়েছে। দুই জায়গাতেই বৃষ্টি হয়েছে। তবে রাতে ঢাকায় কত মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানাতে পারেননি তিনি।
শুক্রবারও ঢাকায় বৃষ্টি হতে পারে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে মনোয়ার হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রাজধানীতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি বলেন, ৫–৬ মে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি বাড়বে। এতে দেশের বড় অঞ্চলজুড়ে তাপমাত্রা কমে আসবে। এসব অঞ্চলের মানুষ গরমে যে কষ্ট পাচ্ছিল, তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
এর আগে রাত নয়টার কিছু আগে পুরান ঢাকায় হিমেল হাওয়ার সঙ্গে কয়েক মিনিট বৃষ্টি ঝরে। সামান্য সময়ের এই বৃষ্টি স্বস্তি নিয়ে এলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী না হওয়ায় অনেকে হতাশা প্রকাশ করেন। সে সময় পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, শনির আখড়া এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বৃষ্টি হওয়ার খবর জানান। যাত্রাবাড়ী এলাকার এক গৃহবধূ প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে আটটার পর আকাশে বিদ্যুৎ চমকায়। পরে কয়েক মিনিট বৃষ্টি হয়। ঠান্ডা বাতাস আসায় শরীরটা জুড়িয়ে যায়।
ঢাকার উপকণ্ঠ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায়ও রাত পৌনে নয়টার দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। এ সময় আকাশে মেঘের গর্জন শোনা যায়। বিদ্যুৎ চমকাতেও দেখা যায়। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজতে রাস্তায় নেমে আসেন।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ সস্তাপুর এলাকার বাসিন্দা মার্জিয়া রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এবারের মতো এমন তাপপ্রবাহ আগে কখনো পড়েনি। প্রচণ্ড গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হয়েছিল। বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিল সারা দেশের মানুষ।
একই এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী নুসরাত জাহানও অনেক দিন পর বৃষ্টির দেখা পেয়ে আত্মীয়স্বজন নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। তবে সে সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় তাঁরা ভিজতে পারেননি।
সিদ্ধিরগঞ্জের ভুঁইগড় এলাকায় বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট ভিজে গেছে বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ অফিসের সহকারী পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টিতে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।