রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা জোরদারের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

বাংলাদেশে হৃদ্‌রোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগের প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। দেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশের জন্য দায়ী এসব অসংক্রামক রোগ। হেলথ প্রমোশন কার্যক্রমের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা জোরদার করা গেলে একদিকে যেমন জনগণের মধ্যে অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা ও চিকিৎসানির্ভরতা কমবে, অন্যদিকে চিকিৎসায় সরকার ও ব্যক্তির ব্যয় কমে আসবে।

হেলথ প্রমোশন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং করণীয় সম্পর্কে এক ভার্চ্যুয়াল সভায় কথাগুলো বলেন বক্তারা। আজ মঙ্গলবার এ সভা হয়। বেসরকারি সংগঠন প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান), বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স, ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টসহ ১৭টি সংগঠন সম্মিলিতভাবে এ সভার আয়োজন করে। সভায় নীতিনির্ধারক, জনস্বাস্থ্যবিদ, ডাক্তার, আইনজীবী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আলোচকেরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে জানান, হেলথ প্রমোশন বা স্বাস্থ্য উন্নয়ন বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয়, যার মাধ্যমে মানুষ নিজের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যের নির্ধারকগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে পারে। এর পাশাপাশি নিজ স্বাস্থ্যের উন্নতি লাভের সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। সাধারণভাবে তামাকপণ্যের ব্যবহার, কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের অভাব, অ্যালকোহল গ্রহণ, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণের অভাব, বায়ুদূষণ প্রভৃতিকে অসংক্রামক রোগের মূল ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তবে এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পূর্ণভাবে এড়ানো বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যুকে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা অগ্রাধিকার দিয়ে একটি সমন্বিত কর্মপন্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়নই হেলথ প্রমোশন। ইতিমধ্যে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১১টি দেশ হেলথ প্রমোশন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তবে স্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে কোনো সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন বাংলাদেশে এখনো শুরু হয়নি। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগ–সংক্রান্ত মৃত্যু এক-তৃতীয়াংশে কমিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। হেলথ প্রমোশন বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ সরকারের স্বাস্থ্যবিষয়ক লক্ষ্য অর্জনে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করবে।