মিরপুরে ১০ নম্বর গোল চক্করে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দিয়েছেন সরকারের সমর্থক কর্মীরা। গোল চক্কর অবরোধমুক্ত হওয়ার এক ঘণ্টার বেশি সময় পর আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার পর থেকে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের সমর্থনে মিরপুর এলাকার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীরা ১০ নম্বর গোল চক্করে এসে সমবেত হতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী গোল চক্করে সমবেত হয়ে চার দিকের সড়ক বন্ধ করে দেন।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজি (বিইউবিটি), মিরপুর কমার্স কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ, ঢাকা স্টেট কলেজ, ভাসানটেক সরকারি কলেজসহ মিরপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা সরকারি চাকরিতে কোটা–সুবিধা বাতিল করা ও ছাত্রদের ওপরে হামলার প্রতিবাদে স্লোগান দিতে থাকেন।
অবরোধের ফলে রোকেয়া সরণি, মিরপুর ২ নম্বর, ১২ নম্বর ও ১৪ নম্বর সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়কে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। তবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্তপূর্ণভাবেই বিক্ষোভ করছিলেন। পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়নি কিংবা সড়কের অবরোধ মুক্ত করতেও কোনো ভূমিকা নেয়নি।
গোল চক্করের পাশের পুলিশ বক্সের সামনে আগে থেকেই যুবলীগের কর্মীরা একটি সমাবেশ করে অবস্থান করছিলেন। প্রথম দিকে তাঁদেরও ছাত্রদের বিক্ষোভ সমাবেশে কোনো বাধা বা উসকানি দিতে দেখা যায়নি।
বেলা একটার দিকে মিরপুর ২ নম্বর সড়ক দিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি বিরাট দলসহ নেতা–কর্মীরা এসে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের ওপর হামলা করেন। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের বেধড়ক মারপিট করতে থাকলে কোটাবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গোল চক্কর থেকে সরে যেতে থাকেন। হামলাকারীরা তাঁদের পিছু ধাওয়া করে গোল চক্করের চার পাশের মহল্লার গলিগুলোর ভেতরে ভাগিয়ে দেন। বিক্ষোভকারীরা সরে যাওয়ায় প্রায় এক ঘণ্টা পর বেলা একটার দিকে মিরপুর এলাকায় যান চলাচল শুরু হয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সরে যাওয়ার পর বেল দেড়টা থেকে মিরপুর এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। এখন ঢাকা ১৪ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খানের নেতৃত্বে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।