রামপুরায় বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর সময় আরেক শিশুকে চাপা দিল বাসটি

বাসচাপায় নিহত প্রতিবন্ধী শিশুর মা পারভীন আক্তারের আহাজারি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ১৩ জুলাই ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর রামপুরা ব্রিজের ইউলুপ থেকে হাতিরঝিল সড়কে নামার সময় ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় জাহিদ হাসান (২৪) নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ সময় জনতার ধাওয়া খেয়ে বাসটি বেপরোয়া গতিতে হাতিরঝিল সড়কে ঢুকে সেখানেও এক প্রতিবন্ধী শিশুকে পিষে মেরেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত জাহিদ চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্রকৌশল বিভাগে পড়তেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জাহিদের বড় ভাই ইমরান হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন। জাহিদ সম্প্রতি চীন থেকে দেশে এসেছিলেন।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে ইমরান হোসেন বলেন, ‘আজ বিকেলে আমরা দুই ভাই বাসা থেকে বেরিয়ে গুলশানে কেনাকাটা করতে বাসে চড়ি। বাস থেকে রামপুরা ব্রিজের ওপর নেমে হেঁটে হাতিরঝিল সড়কে নামছিলাম। পেছনে ছিল জাহিদ। এ সময় ভিক্টর পরিবহনের একটি বাস পেছন থেকে জাহিদকে ধাক্কা দিলে সে রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে। পরে জাহিদকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

রাজধানীর রামপুরায় বাসচাপায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান

হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশীদ আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থী জাহিদকে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

জনতা ধাওয়া দিলে বাসটি বেপরোয়া চালিয়ে হাতিরঝিল সড়কে ঢুকে মেহেদি হাসান (১৩) নামে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক শিশুকে চাপা দেয়। এতে শিশুটি ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায়। মেহেদি পরিবারের সঙ্গে পল্লবীর কালশীতে থাকত। মায়ের সঙ্গে ভিক্ষা করতে হাতিরঝিল এলাকায় এসেছিল।

চালকসহ ভিক্টর পরিবহনের বাসটি আটক করা হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
ঢামেকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইমরান হোসেন বলেন, আগামী ২৫ আগস্ট জাহিদের চীনে ক্লাস করতে যাওয়ার কথা ছিল। এর আগেই সব শেষ হয়ে গেল। জাহিদের মৃত্যুর খবরে মা-বাবা পাগলপ্রায়।

জাহিদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচরে। তাঁর বাবার নাম মোদাচ্ছের আলী। তিন ভাই, এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।