ছাত্রলীগের তিন নেতাকে শাহবাগ থানায় মারধরের ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ ও সানজিদা আফরিনের বক্তব্য নিয়েছে তদন্ত কমিটি। বক্তব্য নেওয়া হয়েছে ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতাদেরও। এ ঘটনায় রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হকের সঙ্গেও কথা বলবে তদন্ত কমিটি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক, নিরাপত্তাকর্মী ও অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তাঁদের বক্তব্যগুলো যাচাই–বাচাই করে এই ঘটনায় কার কী ভূমিকা ছিল, সেটা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, হাসপাতাল থেকে নেওয়ার পর শাহবাগ থানার ওসির কক্ষে আটকে ছাত্রলীগের তিন নেতাকে মারধর করে পুলিশ। এডিসি হারুনের নেতৃত্বে শাহবাগ থানার পরিদর্শক গোলাম মোস্তফাসহ বেশ কয়েক পুলিশ সদস্য ছাত্রলীগ নেতাদের মারধর করেন। তবে ঠিক কতজন পুলিশ মারধরে অংশ নিয়েছিলেন, সেটা নিশ্চিত হতে পারেনি কমিটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির একজন কর্মকর্তা আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী মঙ্গলবাবের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।’
রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হকের সঙ্গে ডিএমপির রমনা বিভাগের এডিসি (ঘটনার পরে বরখাস্ত) হারুন অর রশিদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ৯ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতাকে থানায় নিয়ে মারধর করা হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শাহবাগ থানায় ওসির কক্ষে এই মারধরে নেতৃত্ব দেন এডিসি হারুন। তবে ঘটনার সূত্রপাত হয় বারডেম হাসপাতালে। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে মারধর ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার সূত্রপাতের বিষয়ে আজিজুল হকের স্ত্রী ডিএমপির এডিসি সানজিদা আফরিন বলেন, তিনি চিকিৎসা নিতে ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বারডেম হাসপাতালে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকের সাক্ষাৎ পেতে তিনি সহকর্মী হিসেবে এডিসি হারুন অর রশিদের সহায়তা নেন। এ সময় কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে এসে এডিসি হারুনকে মারধর করেন তাঁর স্বামী আজিজুল।
এ ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর এক দিন পর শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম মোস্তফাকেও বদলি করা হয়। এ ঘটনায় ১০ সেপ্টেম্বর ডিএমপি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।