শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। নিজ বিভাগের এক শিক্ষক ও বিভাগের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তাঁর। এ অবস্থায় তিনি আজ সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) গিয়ে নিজের জীবনের নিরাপত্তা চান।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ওই শিক্ষার্থী।
ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ২০২১ সালে তাঁর বিভাগের এক শিক্ষক তাঁকে যৌন হয়রানি করেন। এ নিয়ে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে অভিযোগ করলে বিভাগের চেয়ারম্যান ও অভিযুক্ত শিক্ষক তাঁকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছেন। রাজি না হওয়ায় তাঁরা তাঁকে হাত-পা কেটে হত্যা করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন।
শিক্ষার্থীর আরও অভিযোগ, তাঁকে একঘরে করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষায় শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করানো হয়েছে। এমনকি স্নাতকের চূড়ান্ত ভাইভায় তাঁকে অকৃতকার্য করানো হয়।
সম্প্রতি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় যৌন হয়রানি ও নানা নিপীড়নের বিরুদ্ধে এ শিক্ষার্থী সোচ্চার হন। সেখানেই অবন্তিকার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে নিজের প্রসঙ্গও টানেন তিনি। নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এসব বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমে তিনি কথা বলেন। তার পর থেকে আবার তাঁকে হত্যাসহ বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
‘স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছি না’ উল্লেখ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘কখন আমাকে মেরে ফেলা হয় সেটা জানি না। শুধু আমি না, তাঁরা আমার পরিবারকেও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে ও হেনস্তা করছে। বর্তমান এই অবস্থা থেকে বাঁচতে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে এসেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) হারুন–অর–রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে। তাঁকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে ডিবির সাইবার টিম।’
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাদেকা হালিম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছিলেন, অভিযোগটি যখন এসেছিল, তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির বহিঃসদস্য হিসেবে তিনিও তদন্ত কমিটিতে কাজ করেছিলেন। প্রতিবেদনও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে বিষয়টি কেন এগুলো না, তা তিনি বলতে পারছেন না। তবে বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী যখন তাঁর পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ার বিষয়গুলো নিয়ে আসে, সেখানে দেখা গেছে বিভিন্ন বিষয়ে এ, এ-মাইনাস, বি গ্রেড পেয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যানের পেপারে তাঁকে ফেল দেখানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলা হবে।