ঢাকা–১৭ আসনের জামিয়া মোহাম্মদিয়া ইসলামিয়া করাইল টিঅ্যান্ডটি কলোনি মাদ্রাসা কেন্দ্রে হুড়মুড় করে এসে লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের কেউ কেউ হাত উঁচু করে নৌকার স্লিপ দেখাচ্ছিলেন। কাউকে কাউকে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা যায়। সকাল ৯টা ১০ মিনিটের ছবি
ঢাকা–১৭ আসনের জামিয়া মোহাম্মদিয়া ইসলামিয়া করাইল টিঅ্যান্ডটি কলোনি মাদ্রাসা কেন্দ্রে হুড়মুড় করে এসে লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের কেউ কেউ হাত উঁচু করে নৌকার স্লিপ দেখাচ্ছিলেন। কাউকে কাউকে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা যায়। সকাল ৯টা ১০ মিনিটের ছবি

ঢাকা–১৭ আসনের একটি কেন্দ্র

হঠাৎ ফাঁকা, হঠাৎ লম্বা সারি

ঢাকা-১৭ আসনের জামিয়া মোহাম্মদিয়া ইসলামিয়া কড়াইল টিঅ্যান্ডটি কলোনি মাদ্রাসা কেন্দ্রে আজ সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরুর সময় ভোটারদের মাঝারি দৈর্ঘ্যের লাইন দেখা গিয়েছিল। ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে লাইনটি প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। এরপর ৯টা ১০ মিনিটের দিকে একসঙ্গে হুড়মুড় করে অনেক ভোটার সেখানে আসেন এবং দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়ে যায়। ১৫ মিনিট পর ওই লাইনও ফাঁকা হয়ে যায়। বেলা ১০টার দিকে আবারও ভোটারদের বড় একটি দল সেখানে হুড়মুড় করে আসেন।

সকাল থেকে কেন্দ্রটিতে এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে। হুট করেই কেন্দ্রটি ফাঁকা হয়ে পড়ছে, আবার হুট করেই তা ভরে যাচ্ছে। হুড়মুড় করে এসে লাইনে দাঁড়ানো এই ভোটারদের অনেকে হাত উঁচু করে নৌকার স্লিপ দেখাচ্ছিলেন। কাউকে কাউকে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা গেছে।

নৌকার এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দেওয়া শুকুর আলী নামের এক ব্যক্তিকে ভিডিও করতে দেখে তাঁর কাছে এর কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে তিনি বলেন, ‘সবাই খালি বলে কেন্দ্র ফাঁকা। এ জন্য ভিডিও করে রাখছি। সব আমাদের লোক। আমরা নিয়ে আসছি।’

লাইনে অপেক্ষমাণ আবুল হোসেন নামের এক প্রবীণ ভোটারকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এ যে দেখেন বয়স্ক মানুষ। তারপরও ভোট দিতে এসেছেন। আমাদের ভোটার।’
জামিয়া মোহাম্মদিয়া ইসলামিয়া কড়াইল টিঅ্যান্ডটি কলোনি মাদ্রাসা কেন্দ্রটি পুরুষ কেন্দ্র। কেন্দ্রের চারটি কক্ষে ২৪টি বুথে ভোট নেওয়া হচ্ছে। মোট ভোটার ১৩ হাজার ১০৪ জন। এর মধ্যে সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ৭৭১টি ভোট পড়েছে, যা ৬ শতাংশের কিছু কম।

ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী ৭ জন। সেখানে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং বিকল্প ধারা বাংলাদেশের কুলা প্রতীকের প্রার্থী মো. আইনুল হক। বাকি ৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাঁরা হলেন বেলুন প্রতীকের আরাফাত আসওয়াদ ইসলাম, টেলিভিশন প্রতীকের এস এম আবুল কালাম আজাদ, সোনালী আঁশ প্রতীকের কাজী শফিউল বাশার, আম প্রতীকের মো. গোলাম ফারুক এবং দোতারা প্রতীকের প্রার্থী শাহ আলম।

আরও পড়ুন

৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়তে পারে, বললেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর

ঢাকা-৫ আসনে এক কেন্দ্রে আধঘণ্টায় পৌনে ২ শতাংশ ভোট পড়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কেন্দ্রে ২ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৫৮টি

তবে কেন্দ্রটিতে নৌকা, বেলুন ও কুলা প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীদের কোনো এজেন্ট দেখা যায়নি।

কেন্দ্রটিতে কয়েক বয়স্ক ভোটারকে যেমন দেখা গেছে, তেমনি তরুণ ভোটারদেরও দেখা গেছে। আশরাফুল ইসলাম নামের এক তরুণ ভোটারের সঙ্গে কথা হলো। তিনি বলেন, তিনি এর আগে গত জুলাইয়ে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন। এবার দ্বিতীয়বারের মতো ভোট দিচ্ছেন তিনি।

ভোট দেওয়ার পর বুথের ভেতর কাউকে কাউকে ছবি তুলতে দেখা গেছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের একজন বেলুন প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত আসওয়াদ ইসলাম কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমার লক্ষ্য ছিল রাত ঠেকানো।’ রাত বলতে রাতে ভোট কারচুপি করা বোঝাচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি হ্যাঁসূচক জবাব দেন এবং বলেন, ‘এটা পার হয়ে গেছে। শীর্ষ পর্যায় থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ভোট সুস্থ হবে।’

ভোটারদের অংশগ্রহণ খুব কম মনে হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন আরাফাত।

কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজেদুল ইসলাম। তাঁর মতে, ‘এখানে ভালোই ভোট হচ্ছে।’ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভালো বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক রেবেকা কক্সও কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছেন। কী দেখলেন, সে ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তবে রেবেকা বলেছেন, তিনি এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চান না। নির্বাচন বিষয়ে তাঁরা তাঁদের পর্যবেক্ষণ কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।