১৪ সেপ্টেম্বর ভোররাতে কৃষি মার্কেটে আগুন লেগে ২৪৩টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ শিগগির শুরু হবে। তবে নতুন কোনো বহুতল ভবন নয়, আবার আগের মতোই টিনের ছাউনির একতলা মার্কেট নির্মাণ করা হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও কৃষি মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির পক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কেটের দোকানমালিক ও ব্যবসায়ীদেরও চাওয়া একই। তাঁরা বলেছেন, বহুতল বিপণিবিতানের ভবন না বানিয়ে মার্কেটের স্থাপনা আগের মতো রেখেই শুধু সংস্কার করে দেওয়া হোক। তাহলে ব্যবসায়ীরা আবারও নিজ নিজ জায়গায় দোকান করার সুযোগ পাবেন।
১৪ সেপ্টেম্বর ভোররাতে কৃষি মার্কেটে আগুন লাগে। আগুনে কৃষি মার্কেটের ‘খ’ ব্লকের ১৩১টি আর ‘গ’ ব্লকের ১১২টি দোকানের সব কটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গতকাল বিকেলে কৃষি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ওই ব্লকের দোকানগুলো বন্ধ। ওই অংশে মার্কেটে প্রবেশের পথ ও ভেতরে যাতায়াতের রাস্তাগুলোও বন্ধ রয়েছে। দোকানে দোকানে কাগজ ঝুলছে। এতে দোকানের নম্বর, মালিকের নাম ও জরুরি যোগাযোগের জন্য মুঠোফোন নম্বর দিয়ে রাখা হয়েছে।
আগুনে মার্কেটের ‘ক’ ব্লক (মাছ, মাংস ও সবজির দোকান) ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। গতকাল বিকেলে ওই অংশের দোকান বেচাকেনা চলতে দেখা গেছে। ‘ক’ ও ‘খ’ ব্লকের মাঝের যে রাস্তা রয়েছে, সেখানে ‘খ’ ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত মুদিপণ্যের ব্যবসায়ীরা দোকান নিয়ে বসেছেন। গতকাল প্রায় ২৭ জন ব্যবসায়ীকে এভাবে কাঠের চৌকির ওপর পণ্যের পসরা সাজিয়ে বেচাবিক্রি করতে দেখা গেছে।
‘মা এন্টারপ্রাইজ’ নামের মুদিপণ্যের দোকানটি ছিল ‘খ’ ব্লকের ১৪ ও ১৫ নম্বর দোকানে। আগুনে ওই দোকানের প্রায় ৩০ লাখ টাকার পণ্য পুড়ে গেছে। গতকাল একটি কাঠের চৌকিতে ১৯ ধরনের পণ্য নিয়ে মাঝের রাস্তায় বেচাবিক্রি করতে দেখা যায় ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান আলীকে।
শাহজাহান আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কত দিন আর বইসা থাকা যায়। ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়েছে। এখন বইসা থাকলে তো না খাইয়া থাকতে হবে। তাই আজ থেকে কাঠের চৌকি নিয়া বসলাম।’
ঢাকা উত্তর সিটি ও ব্যবসায়ী মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মার্কেটটি আগের চেয়ে অন্তত এক ফুট উঁচু করা হবে। তিন দিকে ইটের দেয়াল থাকবে, এক পাশে খোলা জায়গা। সামনের পার্কিংয়ের জায়গায় পানি সংরক্ষণ ও অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম রাখার ব্যবস্থা থাকবে।
আগামী সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সংস্কার ও আধুনিকায়ন কাজ শুরু হবে। সব মিলিয়ে মার্কেট ভালো করার ক্ষেত্রে যেসব কাজ করা প্রয়োজন, সেগুলো করা হবে।
মার্কেট চালু করা নিয়ে কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সলিম উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে যে রকম টিনশেড (টিনের ছাউনির) মার্কেট ছিল, সে রকমই আবার হবে। মেয়র হয়তো আগামী সোমবার মার্কেট পরিদর্শনে এসে সংস্কারকাজ উদ্বোধন করবেন।’
গত সোমবার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি মার্কেট পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল ঢাকা উত্তর সিটির মেয়রের। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই দিনের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
গতকাল রাতে মুঠোফোনে কৃষি মার্কেট নিয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রথম আলোকে মেয়র আতিক বলেন, ‘আমি চাই না ব্যবসায়ীরা বাঁশে ছাতা বেঁধে কিংবা ত্রিপল টানিয়ে ব্যবসা করুন। আমি মার্কেটটি আবার মেরামত করে দেব। সোম বা মঙ্গলবার পরিদর্শনে গিয়ে সংস্কারকাজ শুরু করে দেওয়া হবে।’