রাজধানীতে ২০২২ সালে তার আগের বছরের চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ৯৭ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে। যানবাহনের ধাক্কায় বা চাপায় পথচারীরা বেশি হতাহত হয়েছে। বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে রাতে ও ভোরে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এক বছরে রাজধানীতে দুর্ঘটনার এমন চিত্র উঠে এসেছে।
আজ শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ২০২২ সালের সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ ও পর্যালোচনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন। দেশের ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীতে গত এক বছরে সড়কে ২২৭ জন নিহত হন। যাঁদের মধ্যে পথচারীর সংখ্যা ৬০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। কারণ হিসেবে বলা হয়, বাইপাস সড়ক না থাকায় রাতে মালবাহী ভারী যান রাজধানীতে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। ফলে পথচারীরা বেশি নিহত হচ্ছেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ২৭ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং নিহতের সংখ্যা ২২ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরের দুর্ঘটনার যে চিত্র তুলে ধরা হয় তাতে দেখা যায়, দেশে ৬ হাজার ৮২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৭১৩ জন নিহত এবং ১২ হাজার ৬১৫ জন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ১ হাজার ৬১ এবং শিশু ১ হাজার ১৪৩ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের দাবি, ২০২২ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ মানবসম্পদের ক্ষতি হয়েছে, তার আর্থিক মূল্য ১৮ হাজার ৪৬ কোটি টাকা।
সংগঠনটি বলছে, গত চার বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাদে অন্যান্য দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় সমান। কিন্তু ক্রমাগত মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাড়তে থাকায় বছর বছর তালিকা বড় হচ্ছে। গত বছর সড়কে নিহতদের ৪০ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগের বয়স ১৪ থেকে ৪৫ বছর।
আঞ্চলিক সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল চালকদের বড় অংশ কিশোর ও যুবক, যাঁদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা বেশি। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে তাঁদের ধারণাও কম।
এ ছাড়া জাতীয় সড়কে দ্রুত গতির যানের বেপরোয়া চলাচলের শিকারও হচ্ছে মোটরসাইকেল।
সড়কের পাশাপাশি গত এক বছরে ১৯৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৩১৯ জন নিহত এবং ৩৫৪টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩২৬ জন নিহত হয়েছেন।