রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার নয়াটোলা আনোয়ারুল উলুম নোমানীয়া মডেল কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন মাদ্রাসাশিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আজ রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মুনির আহমেদ খানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। আজ তিনি আবার চাকরিতে যোগ দিতে আসেন। এ সময় মাদ্রাসার প্রাক্তন ও বর্তমান কিছু শিক্ষার্থী তাঁর সঙ্গে আসেন। তখন মাদ্রাসার এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বহিরাগত আসাদুল্লাহ খান, বাপ্পি খানসহ কয়েকজন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ওপর তাঁরা কোনো হামলা করেননি। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে মুনির আহমেদের চাকরি চলে গিয়েছিল। কিছু শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে আজ তিনি মহড়া দিতে এসেছিলেন।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানান, মুনির আহমেদ নয়াটোলা কামিল মাদ্রাসায় ১৯৯৭ সালে মুহাদ্দিস পদে যোগ দেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে ২০১১ সালে তাঁকে প্রথমে বরখাস্ত করা হয়। চাকরি ফিরে পেতে বিভিন্ন দপ্তর ও আদালতে গিয়ে আইনি লড়াই করেন। তাঁর পক্ষে রায় পান। পরে তিনি ২০১৮ সালে মাদ্রাসায় পুনরায় যোগ দেন। এরপর তাঁকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন তিনি।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৭ সেপ্টেম্বর মুনির আহমেদ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বরাবর যোগদানের আবেদন করেন। অধ্যক্ষ যোগদানের অনুমতি দেননি। পরে মুনির আহমেদ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) বরাবর চাকরিতে যোগদানের আবেদন করেন। মাদ্র্রাসা অধিদপ্তর থেকে তাঁর আগের অভিযোগের বিষয়ে পূর্ণ তদন্তের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মুনির আহমেদকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বরাবর একটি আবেদন দিতে বলেন। আজ সেই আবেদন জমা দিতে মাদ্রাসায় এলে বহিরাগত ব্যক্তিরা তাঁকে বাধা দেন।
এ বিষয়ে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যায় দুই পক্ষকে থানায় ডেকেছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তবে মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।