কৃষিমার্কেটে অগ্নিকাণ্ড

‘দৌড়ে এসেও কিছুই বাঁচানো গেল না, ২ দোকান, ৮টি গুদাম পুড়ে ছাই’  

দোকানের পুড়ে যাওয়া সামগ্রীর স্তূপ। এর পেছনে বসে আছেন জুনাইদ ও তাঁর সহকর্মীরা
ছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

দোকানের সামনে স্তূপ করে রাখা হয়েছে মাইক্রো ওভেন, রাইস কুকার, কিচেন উড, ব্লেন্ডার, গ্যাস ও ইলেকট্রিকের চুলা, ফ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের গৃহসজ্জার শোপিসগুলো। কিন্তু এগুলোর একটিও অক্ষত নেই, আগুনে পুড়ে সব কালো হয়ে গেছে। কোনো কোনো পণ্যের প্লাস্টিকের অংশ পুড়ে গিয়ে রয়ে গেছে স্টিল বা লোহার অংশবিশেষ।
স্তূপ করে রাখা এসব পোড়া পণ্যের পাশে কাঠের টুলে করে বসেছিলেন জুনাইদ শেখ।

তিনি কৃষিমার্কেটের বিক্রমপুর ক্রোকারিজ নামের একটি দোকানের কর্মী। দোকানটির মালিক জিয়াউল হক। তাঁর আরও একটি দোকান রয়েছে, নাম বিক্রমপুর ইলেকট্রিক অ্যান্ড গিফট কর্নার।

কর্মী জুনাইদ শেখ বলেন, ‘মালিকের ফোন পেয়ে দৌড়ে দুই মিনিটের মধ্যে মার্কেটে চলে আসি। কিন্তু কিছুই রক্ষা করা যায়নি। অন্য দোকানিদের মতো তালা বা শাটার ভেঙে মালপত্র বের করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ধোঁয়ার কারণে কিছুই সরাতে পারিনি।’

কৃষিমার্কেটের পাশেই টিক্কাপাড়া এলাকায় মেসে থাকেন তিনি। মার্কেট থেকে তাঁর বাসায় যেতে মিনিট পাঁচেক সময় লাগে। কিন্তু আগুন লাগার খবর পেয়ে দৌড়ে ২ মিনিটের মধ্যেই মার্কেটে এসে হাজির হয়েছিলেন তিনি। তখন প্রায় ভোর চারটা বাজে।
জুনাইদ শেখ জানান, তাঁর মালিকের দুটি দোকান। দুটিই গ ব্লকে। এর একটি ইলেকট্রিক ও গিফটের দোকান, আরেকটি ক্রোকারিজ পণ্যের। দোকানে ম্যানেজার ছাড়াও ৭ জন কর্মী আছেন। এ ছাড়া মার্কেটের দোতলায় তাঁদের মোট ৮টি গুদাম ছিল।

আগুনে সব কটি দোকান ও গুদাম পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে আনুমানিক প্রায় তিন কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। এসবের মধ্যে দামি দামি ওভেন, রাইস কুকার, চুলা, ব্লেন্ডার ছিল বলে তিনি জানান।

জুনাইদ আরও বলেন, ইলেকট্রিক দোকানের চাবি রাখা হয় ক্রোকারিজের দোকানে, আর ক্রোকারিজের দোকানের চাবি রাখা হয় মালিকের ভাগনের খ ব্লকে থাকা মুদির দোকানে। ওই দোকানটি সকালে আগে খোলা হয় বলে সেখানে চাবি রাখা হয়। সকালে যে কর্মচারী আগে আসেন, তিনি চাবি নিয়ে দোকান খোলেন। মুদিদোকানের অংশে আগুন লাগার কারণে বাকি দুটি দোকান খোলা যায়নি বলেও জানান তিনি।

দোকানে অনেক টাকা ছিল জানিয়ে জুনাইদ বলেন, ‘প্রতি মাসের যেকোনো বৃহস্পতিবার আমরা চকবাজার ও নিউমার্কেট থেকে দোকানের মালপত্র কিনতে যাই। আজকেও যাওয়ার কথা ছিল। এ ক্ষেত্রে দোকানে টাকা রাখা হয়। কর্মীদের মধ্যে একজন ম্যানেজারের সঙ্গে গিয়ে দরকারি মালপত্র কিনে আনি।’