‘আমার সন্তানকে বুকে ফিরিয়ে দিন, ১০ মাস ঘুমাতে পারি না’

মানববন্ধনে স্কুলছাত্র আহনাফ রহমানের সহপাঠী সামিউল ইসলামকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা আঞ্জুমান আরা বেগম। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ১০ জুলাই
ছবি: দীপু মালাকার

রাজধানীর মিরপুর থেকে স্কুলছাত্র মো. আহনাফ রহমান নিখোঁজ হওয়ার ১০ মাস পেরিয়ে গেছে। আজ সোমবার তার খোঁজ চেয়ে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে মা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘আমার সন্তানকে বুকে ফিরিয়ে দিন, ১০ মাস আমি ঘুমাতে পারি না।’

এই মানববন্ধনে আহনাফের পরিবার–স্বজন ও বন্ধুরা অংশ নেন।

পরিবার বলছে, গত বছর ৩১ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে আহনাফ চা খাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়। মুঠোফোনটি বাসায় রেখে যায়। এরপর আর ফেরেনি সে। ওই দিন সন্ধ্যা থেকে সারা রাত সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে পরদিন ১ সেপ্টেম্বর দারুস সালাম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মা আঞ্জুমান আরা বেগম।

মানববন্ধনে আঞ্জুমান আরা বলেন, তিনি চান আসামিদের যেন কোনোভাবে জামিন না হয়। ছেলেকে না পাওয়া পর্যন্ত যেন আসামিরা জেলহাজতে থাকে।

আহনাফ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় সম্প্রতি আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

আহনাফের নিখোঁজ থাকা নিয়ে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। আজ মানববন্ধনে বাবা আতাউর রহমান মামলার কাগজপত্রের সঙ্গে সেই প্রতিবেদনও গণমাধ্যমকর্মীদের দেখান।

আতাউর রহমান বলেন, তিনি দ্রুত ছেলের সন্ধান চান। তাঁর বিশ্বাস, ছেলে এখনো বেঁচে আছে। তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় হয়তো কোথাও রাখা হয়েছে।

প্রধান আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া হয়নি—এমন অভিযোগ করে মা আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘সুষ্ঠু তদন্ত করা হলে আশা করি ছেলেকে ফিরে পাব।’

নিখোঁজ আহনাফ রহমানের সন্ধান চেয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন করেন পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ১০ জুলাই

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আহনাফের বাবার বন্ধু মহব্বত আলী বলেন, আহনাফ দারুস সালাম সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ত। মেধাবী ও অমায়িক ছেলে হিসেবে এলাকায় তার সুনাম আছে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সমাজকর্মী পারভিন আরা পপি মনে করেন, পুলিশ তৎপর হলে আহনাফকে উদ্ধার করা সম্ভব। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, আসামিরা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে।