উড়ালসড়ক উদ্বোধন

‘আরেকটি উন্নয়নের সাক্ষী হলাম’

দ্রুতগতির উড়ালসড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে। আজ শনিবার বিজয় সরণিতে
ছবি: সাজিদ হোসেন

‘মাদারীপুর থেকে আড়াই ঘণ্টায় ঢাকা এসেছি। এটা সম্ভব হয়েছে পদ্মা সেতুর কারণে। আজ আমরা দেশের আরেক উন্নয়নের সাক্ষী হলাম। আজ দেশে সবচেয়ে দীর্ঘ উড়ালসড়কের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দাঁড়িয়ে আজ শনিবার বিকেলে কথাগুলো বলছিলেন মাদারীপুরের বাসিন্দা আফজাল করিম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে দেশের প্রথম দ্রুতগতির উড়ালসড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) উদ্বোধন করেছেন। আফজাল জানান, তিনি এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই ঢাকা এসেছেন।  

রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত উড়ালসড়কের অংশ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি মোনাজাতে অংশ নেন। পরে আগারগাঁওয়ে পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এই সমাবেশে যোগ দিতেই ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসেছেন। তাঁদের নিয়ে আসা যাত্রীবাহী বাসগুলো জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে রাখা হয়। সেখানেই বিভিন্ন এলাকার নেতা–কর্মীরা অবস্থান করছিলেন।

সমাবেশে মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণের পরে খামারবাড়ি মোড়ে অন্য সঙ্গীদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ঢাকা দক্ষিণ জাতীয় শ্রমিক লীগের সদস্য সায়েদাবাদের বাসিন্দা মো. শরীফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখন নিচের সড়কে যানজট লাগলেও চিন্তা নাই। মানুষ বিকল্প রাস্তা হিসেবে উড়ালপথ ব্যবহার করতে পারবে, যা ঢাকার যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে।’

লালবাগ থানা যুবলীগের কর্মী সোহেল রানা বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী সংসদ নির্বাচনেও তাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে, যাতে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজগুলো থমকে না যায়।

উড়ালসড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাজধানীর অনেক এলাকায় যানজট দেখা গেছে। নিয়ন্ত্রণ করা হয় যান চলাচলও। এতে গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেকের মতোই মা ও ছেলেকে নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন টুম্পা আক্তার

দ্রুতগতির এই উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে রেললাইন ধরে তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এই উড়ালসড়ক।

এদিকে আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও উড়ালসড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি এবং মিরপুরের কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া এলাকায় যানজট দেখা গেছে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ উভয় পাশের সড়কে দুই-তিন সারিতে শতাধিক বাস, ট্রাক, লেগুনা ও প্রাইভেট কার পার্কিং করে রাখতে দেখা গেছে। এ ছাড়া এ এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে। এতে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে বের হওয়া মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে দেখা গেছে। অনেককে হেঁটে চলাচল করতে দেখা গেছে।

খামারবাড়ি মোড়ে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন শরীয়তপুরের বাসিন্দা টুম্পা আক্তার। যাবেন মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায়। সঙ্গে তাঁর মা ও ছয় বছরের ছেলে। টুম্পা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গুলিস্তান থেকে একটি গাড়িতে করে ফার্মগেট পর্যন্ত এসেছি। সেখান থেকে হেঁটে খামারবাড়ি মোড় পর্যন্ত এলাম। এরপর ৪০ মিনিটের মতো দাঁড়িয়ে আছি। কোনো বাস পাচ্ছি না।’