অবৈধ দখল উচ্ছেদে অভিযান চালাতে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের ধাওয়ার মুখে পড়েছেন ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তারা। এ সময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে গর্তে পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত পেয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবেদ আলী। তিনি ঢাকা উত্তর সিটির করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৪-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সরকারের একজন উপসচিব।
ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর গাবতলীতে কল্যাণপুর জলাধারের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে অর্ধশতাধিক বস্তিঘর। আজ সোমবার সেই জায়গা দখলমুক্ত করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযানের সময় উপস্থিত থাকা সিটি করপোরেশনের তিনজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাঁদের ভাষ্য, আজ সকাল ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নিজস্ব কর্মীদের নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে যান ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তারা। অভিযানকারী দলের সদস্যরা ওই জায়গায় পৌঁছানোমাত্রই স্থানীয় বস্তিবাসী ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন এবং ধাওয়া দেন। এমন পরিস্থিতিতে ধাওয়া থেকে বাঁচতে পিছু হটেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা। তখনই আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদ আলীও দৌড়ে নিরাপদ স্থানের দিকে আসছিলেন। ওই সময় তিনি একটি গর্তে পড়ে যান এবং পায়ে আঘাত পান।
পরে দুজন কর্মীর কাঁধে ভর করে তিনি তাঁর দাপ্তরিক গাড়িতে ওঠে অভিযানস্থল ত্যাগ করেন। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ওই তিন কর্মকর্তা আরও জানান, পরে পুলিশ সদস্যরা কাঁদানে গ্যাসের শেল ও দুটি রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই সময় উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়া ঢাকা উত্তর সিটির তিনটি ভারী যানযন্ত্র (২টি ব্যাক-হো লোডার, ১টি পে-লোডার) এবং একটি ডাম্প ট্রাক ভাঙচুর করেন। এতে তিনজন অপারেটর ও একজন চালক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মিরপুরে দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
উচ্ছেদ অভিযানে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহে আলম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব হাসান ও মাহমুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উচ্ছেদ অভিযানে জলাধারের এক একর জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া কল্যাণপুর জলাধারের জায়গায় গড়ে ওঠা প্রায় ৩০টি দোকান, ২০টি বস্তিঘর, ২টি রিকশার গ্যারেজসহ অবৈধ মালপত্র উচ্ছেদ করা হয়।
প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহে আলম বলেন, স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল। বিভিন্ন সময় তাদের নোটিশ দিলেও তারা সাড়া দেয়নি। তাই ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে এই জায়গার অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।