হিরো আলমের ওপর হামলায় চারজন গ্রেপ্তার

ঢাকা-১৭ আসনে ভোট চলাকালে সংসদ সদস্য প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলায় জড়িত অভিযোগে একজনকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছেন গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-১৭ আসনে ভোট চলাকালে সংসদ সদস্য প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলায় জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার কে এন রায় নিয়তি আজ সোমবার রাতে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কে এন রায় নিয়তি বলেছেন, বিকেলে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্রের বাইরে হিরো আলমের ওপর হামলার পরপর ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের সদস্যরা।

ঢাকার গুলশান, বনানী ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোট হয়েছে আজ। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত (মোহাম্মদ এ আরাফাত)। এই উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপরীতে কোনো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে বগুড়ার ছেলে আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমই পরিচিত ছিলেন। মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে সারা দেশে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠা হিরো আলম গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেখানে মহাজোটের প্রার্থী জাসদ নেতা এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিনি।

বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে ধাওয়া দেন নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা। ১৭ জুলাই

আজ ঢাকা–১৭ আসনের ভোট গ্রহণ চলাকালে বেলা সোয়া তিনটার দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে যান হিরো আলম। এ সময় নৌকা প্রতীকের কর্মী ও সমর্থকেরা পেছন থেকে তাঁকে উদ্দেশ্য করে গালাগাল করতে থাকেন এবং কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা হিরো আলমকে ঘিরে রেখে স্কুলের ফটকের দিকে নিয়ে যান। তখনো পিছু নেন তাঁরা।

স্কুলের প্রাঙ্গণ থেকে বেরোনোর পরে হিরো আলমের পাশে পুলিশ সদস্যরা ছিলেন না। স্কুল থেকে বের হয়ে ফটকের সামনে দিয়ে সোজা বনানী ১৬ নম্বর সড়কের দিকে দ্রুত এগোতে থাকেন হিরো আলম। একপর্যায়ে নৌকার ব্যাজধারীরা হিরো আলমকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেন। তখন তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন তাঁরা।

হিরো আলমের সঙ্গীরা তাঁকে উদ্ধার করে সামনের দিকে নিয়ে যান। তবে তারপরও অনেক দূর পর্যন্ত হিরো আলমকে পেছন থেকে ধাওয়া করেন হামলাকারীরা। এ সময় তাঁদের একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘সে (হিরো আলম) করে টিকটক, সে হলো জোকার, সে কেন গুলশান-বনানীর এমপি হতে চায়। এমপির মানে সে জানে?’ কেউ কেউ আবার বলছিলেন, ‘তারে খালি দৌড়ানি দে, মারধর করা লাগব না।’

ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হামলার শিকার হন হিরো আলম। ১৭ জুলাই

এ ঘটনার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ বলেছে, হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনাটি পুরোপুরি ভোটকেন্দ্রের বাইরে ঘটে এবং এতে কেন্দ্রের ভেতরে ভোট গ্রহণে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। পুলিশ সর্বোচ্চ পেশাদারি, আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দ্রুততম সময়ে ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তর করে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।