সাম্প্রতিক অস্থিরতার ঘটনায় ছাত্রলীগের নেত্রীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিচ্ছে ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজের শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস প্রশাসন। ছাত্রীনিবাসের সুপার বলেছেন, শুধু ছাত্রলীগ নেত্রী নয়, বিশৃঙ্খলার জন্য সাধারণ ছাত্রীদেরও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হচ্ছে।
ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দলে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত থেকে শুরু করে ২৫ সেপ্টেম্বর দিনভর উত্তপ্ত ছিল ইডেন কলেজ ক্যাম্পাস। ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন ওরফে রীভা, সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সেদিন রাতেই ইডেন কলেজ কমিটি স্থগিত ও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধী পক্ষের ১২ নেত্রীসহ ১৬ নেতা-কর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার করে। অস্থিরতার ঘটনায় ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
ক্যাম্পাসে অস্থিরতার ঘটনায় সম্প্রতি ছাত্রলীগ নেত্রীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁদের কাছে সন্তোষজনক ‘লিখিত জবাব’ চাওয়া হয়েছে। চিঠির ভাষ্য, ‘গত ২৪ সেপ্টেম্বর ও ২৫ সেপ্টেম্বর সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার সিট (আসন) কেন বাতিল করা হবে না, তার সন্তোষজনক লিখিত জবাব আগামী ১৬ অক্টোবর (রোববার) দুপুর ১২টার মধ্যে হল কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করতে হবে।’ এর মধ্যে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী সুস্মিতা বাড়ৈয়ের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের অননুমোদিতভাবে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে।
জানতে চাইলে ইডেন কলেজের শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের সুপার নাজমুন নাহার আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা আমাদের কিছু না জানিয়ে বাইরে গিয়েছে। এর জন্য তো আমরা শোকজ করতেই পারি। এ রকমটাই করেছি। ডাক্তার দেখানো বা অন্য কিছু বলে যারা দেরি করে হলে ফিরেছে, তাদের শোকজ করেছি। পলিটিক্যাল মেয়েদের দু–তিনজন এবং সাধারণ ছাত্রীদেরও বেশ কয়েকজনকে শোকজ করা হয়েছে। তবে মোট সংখ্যাটা ঠিক বলতে পারছি না। খারাপ ব্যবহারের জন্য এক কর্মচারীকেও শোকজ করা হয়েছে। প্রতিদিনই এমন শোকজ করা হচ্ছে।’
বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী সুস্মিতা বাড়ৈ সাংবাদিকদের নিয়ে কলেজের ভেতরে প্রবেশ করেছেন বলে দাবি করেন নাজমুন নাহার। তিনি আরও বলেন, ‘এর ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। ছাত্রীনিবাসের নিয়ম লঙ্ঘন করে যে-ই বাইরে যাক, তাকেই শোকজ করা হচ্ছে। আমরা চাইছি, ছাত্রীরা সময়মতো ছাত্রীনিবাসে ঢুকুক। যার শোকজের পরিমাণ বেশি হয়, তার ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
জানতে চাইলে সুস্মিতা বাড়ৈ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। এ বিষয়ে প্রশাসনকে লিখিতে জবাব দিয়েছেন তিনি।