রাজধানীর গুলশান এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম রুমন (২৭)। র্যাব বলছে, তাঁকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরের হালিশহর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি খুনের ঘটনার মূল আসামি।
ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে সংস্থাটি। সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস বলেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর গুলশান-২ এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটে। এদিন একটি ছাপরার চা–দোকানি রফিকুল ইসলাম (৬২) ও তাঁর কর্মচারী সাব্বিরকে (১৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়।
র্যাবের তথ্যমতে, রফিকুলের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। তাঁর স্ত্রী-সন্তান গ্রামের বাড়িতে থাকেন। তিনি গুলশান-২-এর একটি প্লটের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করতেন। পাশাপাশি প্লটের ভেতরে ছোট একটি দোকানে চা-বিস্কুট বিক্রি করতেন। রফিকুলের চায়ের দোকানের কর্মচারী ছিল সাব্বির। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর। তাঁরা দুজন প্লটের পেছনের অংশে একটি ঘরে থাকতেন। রুমনও রফিকুলের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। রফিকুল ও সাব্বির হত্যার পর র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। গতকাল রাতে চট্টগ্রাম মহানগরের হালিশহর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১ ও র্যাব-৭ যৌথভাবে এই অভিযান চালায়।
র্যাব কর্মকর্তা মুনিম ফেরদৌস বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রুমন বলেছেন, রফিকুলের চায়ের দোকানে সাব্বির আর কাজ করবে না বলে জানিয়েছিল। তখন রফিকুল এক ব্যক্তির মাধ্যমে তাঁকে (রুমন) পান। তাঁকে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা বেতনে কাজ দেন। কাজ শুরুর পর রুমন বেতন বাড়ানোর জন্য রফিকুলকে চাপ দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কয়েকবার ঝগড়া হয়। এতে রুমন ক্ষুব্ধ হন। তিনি রফিকুলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য তাঁর দোকানের মালামাল ও টাকা লুট করার জন্য পরিকল্পনা করেন। এ কাজের জন্য আরও দুজনকে ভাড়া করেন তিনি।
র্যাবের ভাষ্যমতে, জিজ্ঞাসাবাদে রুমন বলেছেন, ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে দোকানের কাজ শেষে সবাই শুয়ে পড়েন। রফিকুল ও সাব্বির ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত দুইটার দিকে রুমনের নেতৃত্বে তিনজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে রফিকুলকে হত্যা করেন। সাব্বির ঘটনাটি দেখে ফেললে তাকেও হত্যা করা হয়। এরপর তাঁরা নগদ টাকা, কফি মেশিনসহ দোকানের মালামাল কয়েকটি বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে রাখেন। পরদিন সকালের দিকে রুমন এগুলো নিয়ে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে তাঁর বাড়িতে চলে যান। পরে তিনি চট্টগ্রামের হালিশহরে আত্মগোপন করেন।