আলোকচিত্রচর্চার ইতিহাস নিয়ে দৃকে চলছে প্রদর্শনী

রাজধানীর দৃক গ্যালারিতে চলছে খুলনার আলোকচিত্রচর্চার ইতিহাস নিয়ে একটি প্রদর্শনী।‘খুলনার আলোকচিত্রচর্চা ইতিহাসের পথ বেয়ে’ শিরোনামের এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে খুলনা ও এর আশপাশের শহরে গত শতকের শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত তোলা শতাধিক স্থিরচিত্র। এর মধ্যে ১৯৩৭ সালে খুলনা শহরে তোলা একজনের শেষকৃত্যের প্রস্তুতির ছবিও আছে। মূলত ১৯৩৭ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে তোলা বিভিন্ন ছবিই আছে প্রদর্শনীতে। এর সবই সাদাকালো ছবি।

এক সপ্তাহের এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়েছে গতকাল রোববার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায়। প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনেসকো বাংলাদেশের অফিসপ্রধান সুজান ভাইজ, খুলনা জেলার প্রবীণ আলোকচিত্রী নুরুল হক লাভলু, সোহেল মাহমুদ এবং আলোকচিত্রী ও দৃকের পরিচালক শহিদুল আলমসহ অন্যরা।

বাংলাদেশে আলোকচিত্রচর্চার ইতিহাস নিয়ে দৃকের একটি দীর্ঘমেয়াদি ও চলমান গবেষণার ওপর ভিত্তি করে এই প্রদর্শনী ফেব্রুয়ারি মাসে খুলনা জেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে প্রবীণ আলোকচিত্রী বিমল কুমার দে, তুষার কান্তি রায় চৌধুরী, নুরুল হক লাভলু, সিমসন এস অধিকারী, সোহেল মাহমুদ, আবদুল বাদি টুলুর তোলা অনেক ছবি স্থান পেয়েছিল। রেটিনা ও অভিসার স্টুডিওর সংগ্রহশালা থেকে বাছাইকৃত ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল সে প্রদর্শনীতে।

দৃকে প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্যে আলোকচিত্রী নুরুল হক বলেন, খুলনায় আলোকচিত্রের চর্চা শুরু হয় ১৯৪৭ সালে, বাণিজ্যিকভাবে স্টুডিওতে ছবি তোলার মধ্য দিয়ে। পরবর্তীকালে ’৭০–এর দশক থেকে তিনিসহ আরও অনেক আলোকচিত্রী মূল ধারার আলোকচিত্রচর্চা শুরু করেন। সে সময় থেকে তাঁরা ছবি তোলা, নেগেটিভ ডেভেলপ, প্রিন্ট করাসহ নানা বিষয় আরও কীভাবে উন্নত করা যায়, তার অনুশীলন শুরু করেন।

ইউনেসকো বাংলাদেশের অফিসপ্রধান সুজান ভাইজ বলেন, আলোকচিত্রমাধ্যম শিল্প ও ইতিহাসের যথাযথ সংমিশ্রণ। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ছবিগুলোর মধ্য দিয়ে যেমন ছবির মানুষদের শৈল্পিক দিকগুলো উঠে এসেছে, তেমনি সে সময়কার খুলনা জেলার চিত্রও প্রতিফলিত হচ্ছে। এমন ছবির প্রদর্শনী অতীতের জানালার মতো।

দৃকের পক্ষ থেকে শহিদুল আলম বলেন, বহু মানুষের সহযোগিতা, বিশ্বাস ও আস্থা নিয়ে এই সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছে। এই উদ্যোগের বিস্তার ও প্রচার শুধু দৃকের কাজ নয়, সবার দায়িত্ব। আগামী সময়ে যদি এ কাজের প্রয়োজনীয়তা অন্যদের বোঝানো সম্ভব হয়, তাহলে আরও ভিন্নভাবে প্রদর্শনী করা সম্ভব হবে।

‘খুলনার আলোকচিত্রচর্চা ইতিহাসের পথ বেয়ে’ শিরোনামের প্রদর্শনীটি চলবে ১৯ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে দর্শকদের জন্য।