ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন দক্ষিণখান ও উত্তরখান এলাকার প্রধান দুটি সড়কের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হতে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে। দ্রুত সড়ক দুটিতে নালা নির্মাণের অবশিষ্ট কাজ শেষ করে, ইট ও বালু ফেলে জনগণের চলাচলের উপযোগী করা হবে। আর ডিসেম্বরের মধ্যে পিচ ঢালাই দিয়ে সড়ক নির্মাণের পুরো কাজ শেষ করা হবে।
আজ মঙ্গলবার ওই দুটি এলাকার সড়কের উন্নয়নকাজ পরিদর্শনে গিয়ে এলাকাবাসীকে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মাহমুদুল হাসান। এ সময় সড়ক নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দুই–তিন বছর ধরে ওই দুটি এলাকার প্রধান দুটি সড়কসহ বিভিন্ন অলিগলির রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি ও কাটাকাটি করে নালা নির্মাণের কাজ করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষ। একসঙ্গে বেশির ভাগ সড়কে উন্নয়নকাজ চলার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সর্বশেষ গত শুক্রবার সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় গুলশানের নগর ভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ার দিয়ে মানববন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ সংস্থাটির প্রশাসক ওই এলাকা পরিদর্শনে যান।
প্রশাসক মাহমুদুল হাসান বলেন, আগামী নভেম্বরের মধ্যে দক্ষিণখান ও উত্তরখানের প্রধান দুটি সড়ক যান চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি সম্পন্ন হবে। এই এলাকায় স্থায়ীভাবে টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। রাস্তা ও ড্রেনেজের কাজের জন্য জনগণের বেশি ভোগান্তি হয়েছে। এ বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসেও প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় স্বাভাবিক গতিতে কাজ চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রশাসক বলেন, চলমান প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ডিএনসিসির পুরোনো উন্নত এলাকার এবং দক্ষিণখান ও উত্তরখান এলাকার নাগরিক সেবার কোনো পার্থক্য থাকবে না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কিছুদিন ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে প্রশাসক বলেন, ‘টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে এই এলাকায় সিটি করপোরেশন প্রশস্ত রাস্তা ও নালা নির্মাণের কাজ করছে। স্থায়ীভাবে ব্যাপক কাজ হওয়ায় জনগণের চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। বর্তমান সরকার আপনাদের দুর্ভোগ কমাতে ও প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে সচেষ্ট।’
স্থানীয় বাসিন্দারা কাজে ধীরগতি নিয়ে অভিযোগ করেন। এ ছাড়া উন্নয়নকাজের জন্য কেন সবগুলো সড়ক একসঙ্গে কেটে ফেলে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দক্ষিণখানের বাসিন্দা সোলায়মান হোসেন বলেন, ‘কষ্টের কথা বলার কোনো ভাষা নাই। সড়কের এত বাজে অবস্থা যে হেঁটে চলারও কোনো জো নেই। দিনের পর দিন এলাকার নারী, শিশু, বয়স্ক সবাইকে অমানবিক কষ্ট করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এখানে নিজে না থাকলে কেউ সেই কষ্ট অনুভব করতে পারবে না।’
পরিদর্শনে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈন উদ্দিন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শরীফ উদ্দীন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেকুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফারুক হাসান মো. আল মাসুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা উত্তর সিটি সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই এলাকায় এখন মোট ৬০ কিলোমিটার সড়কে উন্নয়নকাজ চলছে। কাজ শেষ হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৮ কিলোমিটার সড়কের।