শিক্ষার্থীকে মানসিক নির্যাতনের মামলায় উইলস লিটল ফ্লাওয়ারের অধ্যক্ষসহ নয়জনের বিরুদ্ধে সমন

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

এক শিক্ষার্থীকে মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ ন ম শামসুল আলমসহ নয়জনের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিল সুমু চৌধুরী সোমবার এ আদেশ দেন। ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাকিব চৌধুরী প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অপর যে আটজনের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ হয়েছে, তাঁরা হলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক নাসির উদ্দিন, ফয়সাল শামীম, মো. আতিক, ফেরদৌসী সুমি, তরিকুল আজম খান, প্রিতীশ বিশ্বাস, নিরাপত্তারক্ষী জিয়াউল হক ও মাসুদ রানা।

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন শিক্ষার্থীর অভিভাবক। শিশু আইনের ৭০ ধারায় করা মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন আদালত।

শিক্ষার্থীর বাবার আইনজীবী সাদেকুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর বাবা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদে দুবার অভিভাবক প্রতিনিধি ছিলেন। ওই প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষকের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন তিনি। এসব বিরোধের জেরে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষসহ সাতজন শিক্ষক ও দুজন নিরাপত্তারক্ষী ওই শিক্ষার্থীকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করেন। পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে তাকে মানসিক চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ওষুধ সেবন করানো হয়।

আইনজীবী সাদেকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, শিশু আইনের ৭০ ধারা লঙ্ঘনের দায়ে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। আদালত পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে নয়জনের বিরুদ্ধে সমন দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ ন ম শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগটি সঠিক নয়। বিষয়টি আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন তিনি।
আরেক শিক্ষক মো. আতিক প্রথম আলোকে বলেন, ওই শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের প্রশ্নই আসে না। শিক্ষার্থীর বাবা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য থাকাকালে আগের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষকেরা আন্দোলন করেন। এসব বিরোধের জেরে নিজের ছেলেকে দিয়ে শিক্ষকদের শায়েস্তা করার জন্য হয়রানিমূলক মামলা করেছেন তিনি।

তবে ওই শিক্ষার্থীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষকদের মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে তাঁর ছেলের শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শে ধীরে ধীরে তাঁর সন্তান আগের থেকে ভালো রয়েছে।