চার বছরের সন্তান লাবিব হাসানকে নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ বিমানবাহিনী জাদুঘরে ঘুরতে এসেছেন আবদুল্লাহ আল মামুন ও আয়েশা সিদ্দিকা দম্পতি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে মিরপুর ১২ নম্বর এলাকা থেকে রিকশায় করে আসেন তাঁরা। রিকশা থেকে নেমে হাস্যোজ্জ্বল মুখে এই প্রতিবেদককে মামুন বললেন, ‘ঈদের দিন তো, রাস্তা ফাঁকা। যানজট নেই। অল্প সময়ে চলে এসেছি।’
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে ঢাকার রাস্তাঘাট সাধারণত ফাঁকাই থাকে। এই দিনে যাঁরাই স্বজনদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন, তাঁদের খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। বছরে দুটি ঈদের দিন ও ঈদের পরের কয়েক দিন ব্যস্ত এই নগরীর সড়কগুলোতে অনেকটা স্বস্তি নিয়ে চলাচল করা যায়। আজও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
সন্ধ্যার দিকে আবদুল্লাহ আল মামুন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিমানবাহিনীর জাদুঘরে মানুষের ঢল নেমেছিল। বেশির ভাগই এসেছেন সন্তানদের নিয়ে। মাগরিবের পর তাঁরা বাসায় ফিরে গেছেন। তবে বাসায় ফেরার পথে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে ১৩ মিনিটের বেশি সময় যানজটে পড়ে ছিলেন।
আজ বেলা একটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত রাজধানীর কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখেছেন প্রথম আলোর এই প্রতিবেদক। এর মধ্যে যেসব সড়কের পাশে সময় কাটানোর ব্যবস্থা আছে, যেমন শেরেবাংলা নগরে চন্দ্রিমা উদ্যান, মিরপুর ১ নম্বরে সনি স্কয়ার গোলচত্বর, বিজয় সরণির বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ পাশের সড়ক তথা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ—এসব এলাকায় মানুষের সমাগম দেখা গেছে। এ ছাড়া পাড়া-মহল্লা ও অলিগলির সড়ক অনেকটাই ছিল ফাঁকা। ঘর থেকে যাঁরা বেরিয়েছেন, কাছের দূরত্ব হলে রিকশায় করে গেছেন। কেউ কেউ সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও উবারের গাড়িতে চড়ে গেছেন।
বিকেলে উবারের গাড়িতে করে মোহাম্মদপুরের বছিলা সেতুসংলগ্ন এলাকা থেকে মিরপুর ডিওএইচএস শপিং মল এলাকায় যান কায়সার এলাহী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। এতটা স্বস্তি নিয়ে শুধু ঈদের সময়েই ঘোরাঘুরি করা যায়!
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আরও দেখা যায়, পাড়া-মহল্লার বেশির ভাগ দোকান বন্ধ। তবে কয়েকটি এলাকায় কিছু কিছু খাবারের দোকান, ফার্মেসি ও মুদিদোকান খোলা থাকতে দেখা গেছে। এ দিন অনেকে সিনেমা দেখতেও বেরিয়েছেন।
নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন চন্দ্রিমা উদ্যানে। মাগরিবের আগে বিজয় সরণি সিগন্যালে প্রায় ১৫ মিনিট যানজটে আটকে ছিলেন বলে জানান তিনি। সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা তিনটার পর থেকে বিজয় সরণি এলাকায় কিছুটা যানবাহনের চাপ তৈরি হয়। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, সামরিক জাদুঘর, চন্দ্রিমা উদ্যান ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আসা মানুষের ভিড়ের কারণে এই সড়কে যানবাহন চলাচল কিছুটা ধীরগতির হয়।