রাজধানীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনে দুটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দুই সিটি করপোরেশনের প্রশাসককে আহ্বায়ক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে এ কমিটি করা হয়।
প্রতিটি কমিটিতে দেশের তিনজন করে বিশেষজ্ঞকে সদস্য করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতি কমিটির সদস্যসংখ্যা ৬।
দেশব্যাপী ডেঙ্গু ও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধকল্পে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে কাজ করবেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসম) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ গোলাম ছারোয়ার, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্টোমোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রাশেদুল ইসলাম এবং কীটতত্ত্ববিদ মো. রেজাউল করিম।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হয়ে কাজ করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. শেফালি বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্টোমোলোজিস্ট ড. তানজিন আক্তার এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফিরোজ জামান।
ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে এখন যেসব কার্যক্রম চলমান আছে, সেগুলোর সঙ্গে নতুন করে কী ধরনের কাজ যোগ করা যায়, নতুন কমিটি সে পরামর্শ দেবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে তাঁরা গবেষণা করবেন। ডেঙ্গুর প্রজনন কীভাবে ধ্বংস করা যায়, জাতীয় কমিটিকে সে পরামর্শ দেবে নতুন কমিটি। এ ছাড়া চলমান কার্যক্রমের কার্যকারিতা নিয়েও তারা পরামর্শ দিতে পারবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ এফ হাসান আরিফ বলেন, ‘সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। উভয় পরিকল্পনায় বিশেষজ্ঞদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। এখন ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ সংক্রমণের সময় চলছে। আমি আশা করি এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কমিটি দুটি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।’
সভায় বিশেষজ্ঞরা জানান, গড়পড়তা কার্যক্রম গ্রহণ না করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে হটস্পট চিহ্নিত করে মশকনিধন কর্মসূচি নিতে হবে। শুধু নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক নয়, সারা বছর মশকনিধন কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। প্রকৃত অর্থে মশা ও লার্ভা বিনষ্ট হয়েছে কি না, তা এন্টোমোলজিস্ট দিয়ে নিরূপণ করতে হবে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীকে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ, তথা হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সর্বোপরি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।