ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মিরপুরের গৈদারটেক এলাকায় (পাঁচটি প্লট) অবস্থিত জলাশয়ে পুনরায় মাটি ভরাট ও যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এবং সেন্ট্রাল টিস্যু কালচার অ্যান্ড সিড হেলথ ল্যাবরেটরি প্রকল্প পরিচালকের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ১ আগস্ট ওই রিটটি করে।
আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না।
পরে আইনজীবী এস হাসানুল বান্না প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বেলা জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত মিরপুর মৌজার গৈদারটেক এলাকায় ১১৭ একর জলাশয় পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুকুর হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। পুকুরটি ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে (২০২২-২০৩৫) জলাশয় হিসেবে চিহ্নিত। তবে আধুনিক পদ্ধতিতে বীজ আলু উৎপাদনের লক্ষ্যে ‘সেন্ট্রাল টিস্যু কালচার অ্যান্ড সিড হেলথ ল্যাবরেটরি’ নির্মাণের জন্য ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে (২০২২-২০৩৫) চিহ্নিত ওই জলাশয়ের প্রায় ১২ একর জমি ভরাট করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ওই জলাশয় ভরাটের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনকে চিঠি দেয়। এই চিঠির তোয়াক্কা না করে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া ওই জলাশয়ের ১২ একর জায়গা সম্পূর্ণ ভরাট করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন। ২০০০ সালের প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ও ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে জলাশয় হিসেবে চিহ্নিত ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন এবং জলাশয়ে বালু ভরাট ও অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের সুযোগ নেই। রাজউকের আওতাধীন এলাকায় যেকোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করতে হলে রাজউকের অনুমোদন নেওয়ায় বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের ওই জলাশয় ভরাট কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে বেলা রিটটি করে।