জন্মস্থানে ৬৯ বছর পর ফিরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন রুমা চৌধুরী
জন্মস্থানে ৬৯ বছর পর ফিরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন রুমা চৌধুরী

‘বাড়িটি রাষ্ট্রের, তবু একবার স্পর্শ করতে আমি বাংলাদেশে যাব’

আরেকবার বাংলাদেশে আসতে চান ৭৪ বছরের রুমা চৌধুরী। কয়েকটি ইচ্ছা পূরণ করা বাকি রয়েছে তাঁর। ঢাকার রমনা পার্কে এক বিকেলে হাঁটবেন, শতবর্ষী কোনো গাছ পেলে সেটির তলায় দাঁড়িয়ে থাকবেন। পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকে কিছুক্ষণ একা বসবেন। রুমার আরেকটি ছোট ইচ্ছা, পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের ৩৩ নম্বর মোহিনী মোহন দাস লেনের বাড়িতে যাবেন। সেখানকার হলঘরে একবার দাঁড়াবেন তিনি।

একসময় এই হলঘরে রুমা চৌধুরীর পূর্বপুরুষদের তেলরঙে আঁকা বেশকিছু ছবি ছিল। ছবিগুলো এখনো আছে, নাকি ঘরটাই আর নেই, তা নিশ্চিত জানেন না তিনি। তবু ইচ্ছা করে বলেই প্রথম আলোকে রুমা চৌধুরী বললেন, ‘নিজের জন্মস্থানের সবকিছুই তো মানুষের কাছে স্মৃতিময়। অনেকবার শুনেছি ওই হলঘরের কথা, কিন্তু খুঁজে পাইনি। কেউ তখন নির্দিষ্ট করে বলতে পারল না।’  

মনে হচ্ছিল কেউ হারিয়ে যায়নি জীবন থেকে। সবকিছু আগের মতো আছে। আশ্চর্য ঘটনা কী জানেন, সেদিন আমার জন্মদিন। ৬৯ বছর পর জন্মদিনের দিনই সেই ঘরে এসে দাঁড়ালাম, যে ঘর, যে বাড়ি ছেড়ে আমাদের চলে যেতে হয়েছিল।
রুমা চৌধুরী, কলকাতা থেকে ঢাকায় জন্মস্থান দেখতে আসা নারী।

রুমা চৌধুরী ৬৯ বছর পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে ঢাকায় ছুটে এসেছিলেন নিজের জন্মের ঘরটা একবার দেখতে। কিন্তু আরেক দেশে আসার পথশ্রমের চেয়ে যেন দীর্ঘ হয়েছিল বাড়ির সদর থেকে অন্দরমহলের দূরত্ব। জন্মের সেই ঘরে ঢুকতে অনুমতি নিতে হয়েছিল বর্তমানে সেখানে বসবাস করা কয়েকটি পরিবারের কাছ থেকে। এ ঘটনা পুরান ঢাকার ‘সূত্রাপুর জমিদারবাড়ি’ নামে পরিচিত পুরোনো বাড়িটি ঘিরে। 

বিশ শতকের শুরুর দিকে প্রতাপশালী ব্যবসায়ী ও সমাজসংস্কারক রেবতী মোহন দাস তৈরি করেছিলেন বাড়িটি। তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের সদস্যরা থাকতেন এখানে। মূল দরজা দিয়ে প্রবেশ করেই সামনের অংশে দীর্ঘ করিন্থিয়ান কলামের স্থাপনা, যা খুব একটা চোখে পড়ে না ঢাকা শহরে।

ভারতে পাড়ি জমানোর পর রুমা চৌধুরী প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসেন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। বর্ণনার স্মৃতি থেকে খুঁজে বের করলেন সেই ঘর। সঙ্গে কলকাতা থেকে এসেছিলেন পরিবারের কয়েক সদস্য। দোতলার বিশাল জানালার সেই ঘরে ঢুকেছিলেন। মিলিয়ে দেখেছিলেন ঠাকুরদার আমলের সেসব নকশা।

প্রশস্ত উঠান আর ৫০ ফুটের মতো দীর্ঘ কলাম নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই বাড়ি যেন এক স্মৃতির ভান্ডার। সেই বাড়ির গল্পটা বদলে গেল ১৯৫০ সালে। তখন রেবতী মোহনের পরিবারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের সদস্যরা বাস করছেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে রেবতী মোহনের বড় ছেলে সত্যেন্দ্র কুমার দাসকে চলে যেতে হয়েছিল ভারতে।

ওই সময় বিশাল এই বাড়ি বিক্রি করা কিংবা হাতবদল করার সুযোগ ছিল না বলে শুনেছিলেন রুমা চোধুরী। এর পর থেকে এই বাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে নানাভাবে। শত্রু সম্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তি, এরপর তালিকাভুক্ত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে রায় বাহাদুর খেতাব পাওয়া রেবতী মোহন দাসের সেই বাড়ি এখন এজমালি। ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয় এবং তাদের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ৫০টিরও বেশি পরিবারের বসবাস বাড়িটিতে।  

পুরান ঢাকার সূত্রাপুর জমিদারবাড়ি

রেবতী মোহন দাসের ছেলে রায় বাহাদুর সত্যেন্দ্র কুমার দাস। তাঁরই মেয়ে রুমা চৌধুরী। রুমা জন্মেছিলেন এই বাড়িতে, দোতলার এক ঘরে। সূত্রাপুর জমিদারবাড়ির পেছন দিকে দ্বিতীয় তলায়, দক্ষিণ–পূর্বমুখী ঘর সেটা। এখান থেকে একসময় দেখা যেত ধোলাইখাল। সেই ঘরের জানালায় আছে রঙিন কাচের নকশা। রোদে কাচের নকশার ছায়া পড়ে ঘরের মেঝেতে। সামনে একটু জায়গা নিয়ে টেরাস মতো। আশপাশে তখন গাছপালাঘেরা ছিল। বিকেল হতে না হতে সুনসান হয়ে যেত পথঘাট।

এসব গল্প বয়োজ্যেষ্ঠদের মুখে মুখে শুনেছেন রুমা চৌধুরী। ১৯৫০ সালের ১৮ জানুয়ারি তাঁর জন্ম। জন্মের পর সপ্তাহ তিনেক এই ঘরেই তাঁকে রাখা হয়েছিল। এরপর সব ফেলে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর্ব। কিন্তু চাইলে কি আর মানুষ সব ফেলে যেতে পারে? রেবতী মোহন দাসের পরিবারের মানুষেরা সঙ্গে নিয়ে গেলেন হারানোর কষ্ট আর পূর্ব বাংলার স্মৃতি।

রুমা চৌধুরী বড় হয়েছেন ভারতে, কিন্তু তাঁর কথার মধ্যে ঢাকার আঞ্চলিক টান পাওয়া যায়। জানতে চাইলে বললেন, ‘আমার বাবা (সত্যেন্দ্র কুমার দাস) মারা গিয়েছেন ১৯৬৪ সালে। মা যূথিকা দাসের মুখে শুনতে শুনতে মনে হতো সবই চেনা বাংলাদেশের। তাঁদের কথায় ঢাকার টান ছিল। সেই টান দিয়ে মাঝেমধ্যে কথা বলতে চেষ্টা করে দেখি, আপন লাগে।’

আমার জন্ম আর বেড়ে ওঠা সবই কলকাতায়। কিন্তু রুমার ঘটনায় অনুভব করেছিলাম, নিজের জন্মভূমি হারানোর কষ্ট কেমন হয়।
প্রশান্ত চৌধুরী, রুমা চৌধুরীর স্বামী।  

ভারতে পাড়ি জমানোর পর রুমা চৌধুরী প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসেন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। বর্ণনার স্মৃতি থেকে খুঁজে বের করলেন সেই ঘর। সঙ্গে কলকাতা থেকে এসেছিলেন পরিবারের কয়েক সদস্য। দোতলার বিশাল জানালার সেই ঘরে ঢুকেছিলেন। মিলিয়ে দেখেছিলেন ঠাকুরদার আমলের সেসব নকশা।

ওই সময় দোতলার সেই ঘরে চুপ করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন রুমা চৌধুরী। ওই মুহূর্তে ঠিক কী অনুভূত হচ্ছিল, স্পষ্ট বলতে পারেন না তিনি। প্রথম আলোকে বললেন, ‘মনে হচ্ছিল কেউ হারিয়ে যায়নি জীবন থেকে। সবকিছু আগের মতো আছে। আশ্চর্য ঘটনা কী, তা জানেন, সেদিন আমার জন্মদিন। ৬৯ বছর পর জন্মদিনের দিনই সেই ঘরে এসে দাঁড়ালাম, যে ঘর, যে বাড়ি ছেড়ে আমাদের চলে যেতে হয়েছিল।’

তখন রুমার পাশে ছিলেন স্বামী প্রশান্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা—সবই কলকাতায়। কিন্তু রুমার ঘটনায় অনুভব করেছিলাম, নিজের জন্মভূমি হারানোর কষ্ট কেমন হয়। আমার শ্বশুরমশাই রায় বাহাদুর সত্যেন্দ্র কুমার দাস কলকাতায় এসে দেশপ্রিয় পার্কের কাছে বসতি করেছিলেন, সেটাও অনেক সংগ্রাম করে। এখনো তাঁদের ঠিকানা ওটাই।’

এই ঘরেই জন্মেছিলেন রুমা চৌধুরী। ঘরটি দেখতে কলকাতা থেকে পুরান ঢাকায় এসেছিলেন তিনি

একসময় ভারত সরকারের সমাজকল্যাণ (সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার) মন্ত্রণালয়ে হিসাবরক্ষক পদে কাজ করতেন প্রশান্ত চৌধুরী। এখন বয়স ৮৩ বছর। তিনি শ্বশুর সত্যেন্দ্র কুমার দাসকে দেখেননি। তবে তাঁকে নিয়ে গর্ব আছে অনেক। প্রথম আলোকে বলেন, ‘একসময় নাকি এই পরিবারের অনেক প্রভাব ছিল ঢাকায়। মানুষের জন্য অনেক ভালো কাজ করতেন শুনেছি। সেই আমলে মিটফোর্ড হাসপাতালে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছিলেন আমার শ্বশুর। এসব কথা শুনে যেমন ভালো লাগে, আবার অবাকও হই দেশ ছাড়ার ইতিহাস মনে করে।’

রেবতী মোহন দাসের ‘আত্মকথা’ নামে একটি বই রয়েছে। ১৩৪১ বঙ্গাব্দে বইটি প্রকাশিত হয়। এই বইয়ে গত শতকের বিশ ও ত্রিশের দশকের ব্রিটিশ শাসন থেকে শুরু করে ঢাকার সামাজিক–অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়। ঢাকায় প্রথম মূক ও বধির বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, ঢাকা বিধবাশ্রম, ‘পূর্ব্ববাঙ্গালা ব্রাহ্মসমাজ’ নিয়েও লিখেছেন তিনি।

এই বইয়ে পরিবার নিয়ে লেখা পরিচ্ছেদে রেবতী মোহন দাস লিখেছেন, ‘১৯৩৩ খৃষ্টাব্দে ১লা জানুয়ারী ১৯৩৮ সাল, ১৬ই পৌষ কাগজে দেখিলাম, শ্রীমান সত্যেন্দ্র “রায় বাহাদুর” খেতাবী পাইয়াছে। ১৯২৬ খৃষ্টাব্দে সরকার দয়া করিয়া আমাকেও এই উপাধি দিয়াছিলেন।’ বইয়ে রেবতী মোহন দাস উল্লেখ করেছেন, ‘আমার পুত্রেরা মানুষের সেবা করতে পারছে, এ আমার আনন্দ।’ সত্যেন্দ্র কুমার দাস ছিলেন ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান ও বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সভ্য।

বিশাল এই বাড়ি বিক্রি করা কিংবা হাতবদল করার সুযোগ ছিল না বলে শুনেছিলেন রুমা চোধুরী। এর পর থেকে এই বাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে নানাভাবে। শত্রু সম্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তি, এরপর তালিকাভুক্ত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে রায় বাহাদুর খেতাব পাওয়া রেবতী মোহন দাসের সেই বাড়ি এখন এজমালি। ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয় এবং তাদের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ৫০টিরও বেশি পরিবারের বসবাস বাড়িটিতে।  

বাবা রেবতী মোহন দাসের লিখে যাওয়া বইটি ছেলে সত্যেন্দ্র কুমার দাসের সহযোগিতায় প্রকাশিত হয়েছিল। সূত্রাপুরে অবস্থিত তাঁদের সেই বাড়ির সামনের সড়কের নামও রেবতী মোহনের নামে; সংক্ষিপ্তরূপে সেটি আর এম দাস রোড।

রেবতী মোহনের ‘আত্মকথা’ বইয়ে উঠে এসেছে ১৯৩১ সালের ২৫ মে সূত্রাপুর বাজারে তাঁর এক কর্মচারীর ছেলের নিহত হওয়ার ঘটনা। এই ঘটনা ঘিরে দাঙ্গা পরিস্থিতির শুরুর একটি আভাস লিখে গেছেন তিনি।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছিলেন রুমা চৌধুরী। ফিরে যাওয়ার সময় সবাই মিলে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তুললেন ছবি

রুমা চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় এ বছরের ২ ও ৩ জানুয়ারি। এত দিনেও কেন একবার আসেননি জানতে চাইলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওখান থেকে চলে আসার পর এখানে (কলকাতায়) থিতু হওয়ার অনেক সংগ্রাম ছিল। গত শতকের ষাটের দশকে পাসপোর্ট নবায়ন করতেও আমাদের যেতে হতো পেট্রাপোল স্থলবন্দরে। যতবার ওখানে যেতাম, এপাশ থেকে তাকিয়ে বাংলাদেশের স্থলভাগের যতখানি দেখা যায় দেখতাম। কেমন যেন একটা অনুভব। আমার বাবা আর ঠাকুরদার দেশ, আমার জন্মস্থান। যাওয়া হয়নি অনেক কারণে।’

সূত্রাপুরের আর এম দাস রোডের এই বাড়িকে ২০১৮ সালে ফায়ার সার্ভিসের জাদুঘর বানানোর সিদ্ধান্ত নেয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। গত অক্টোবরে এই বাড়ির এখনকার পরিস্থিতি দেখতে যান এই প্রতিবেদক। তখন সেখানে কথা হয় কবি নজরুল সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সায়েম আল ফাহাদের সঙ্গে।

২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি রুমা চৌধুরী যখন বাড়িটিতে আসেন, তখন সেখানে ছিলেন ফাহাদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রুমা চৌধুরী ওই ঘর খুঁজে পেয়ে প্রায় কেঁদে ফেলেছিলেন। শুনেছি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘আরবান স্টাডি’ নামে একটি গ্রুপে বাড়িটির ছবি পোস্ট করা হয়েছিল। সেটা রুমা চৌধুরীর এক স্বজনের চোখে পড়েছিল। সেই সূত্র থেকে রুমা চৌধুরী খবর পান এবং কলকাতা থেকে চলে আসেন। তবে তিনি একটি হলঘর খুঁজছিলেন। সেটি পাওয়া যায়নি। তখন বাড়ির বয়স্ক এক বাসিন্দা বলছিলেন, দোতলায় এমন একটি ঘর ছিল একসময়। সেসব বহু আগেই বদলে ফেলা হয়েছে।’

পুরোনো স্থাপনা নিয়ে কাজ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আরবান স্টাডি। এর প্রধান নির্বাহী তাইমুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রুমা চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এসে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। প্রত্নতত্ত্বের তালিকাভুক্ত একটি বাড়িতে দমকল বাহিনীর জাদুঘর বানানোর পরামর্শ মোটেই সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। আজ নতুন ঘর, কাল আরেকটা ছাউনি—এসব তৈরি করা হচ্ছে এই স্থাপনার মধ্যে।’ তাইমুর ইসলামের পরামর্শ, সূত্রাপুর জমিদারবাড়িটি সংরক্ষণ করে শিশুদের জন্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা দরকার।

নতুন বছরের শুরুতে রুমা চৌধুরীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, বাংলাদেশে আবার আসবেন? রুমা চৌধুরী বলেন, ‘বয়স হয়েছে অনেক, কিন্তু যেতে চাই আরেকবার। শুনেছি আমার বাবা ঢাকার রমনা পার্কের দিকে ভোরে হাঁটতে যেতেন। সেখানে শতবর্ষী গাছ থাকলে বুঝব, বাবা সেটা দেখেছেন। জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) পড়তেন বাবা। সেখানে গিয়ে বসে থাকব। আর ওই যে হলঘরটার কথা বললাম, ওখানে যাব। গতবার এত দ্রুত সব ঘটেছে যে কিছু খুঁজে দেখার আগেই আবার ফিরতে হয়েছে।’ রুমা চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমি জানি বাড়িটি এখন রাষ্ট্রের। তবু আরেকবার শুধু স্পর্শ করতে বাংলাদেশে যাব।’